মার্কিন ড্রোন হামলায় আল কায়েদার শীর্ষ নেতা নিহত

ড্রোন হামলা চালিয়ে আল কায়েদার শীর্ষ নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরিকে হত্যা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক ঘোষণায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

জো বাইডেন জানান, ৭১ বছর বয়সী জাওয়াহিরিকে হত্যার জন্য হামলা চালাতে তিনি অনুমোদন দিয়েছিলেন। এজন্য কয়েক মাস ধরে পরিকল্পনা করা হচ্ছিল।

বিবিসি জানিয়েছে, রবিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ)-এর তরফে এই ড্রোন হামলা চালানো হয়। কর্মকর্তারা বলছেন, মার্কিন ড্রোন থেকে যখন দুইটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয় তখন জাওয়াহিরি একটি সেফ হাউজের বারান্দায় দাঁড়িয়েছিলেন। ওই সময়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও বাড়িটিতে উপস্থিত ছিলেন। তবে তাদের কোনও ক্ষতি হয়নি।

জো বাইডেন বলেন, জাওয়াহিরির বিরুদ্ধে মার্কিন নাগরিকদের হত্যা ও সহিংসতার প্রমাণ রয়েছে। তার ভাষায়, ‘এখন ন্যায়বিচার হয়েছে এবং এই সন্ত্রাসী নেতা আর বেঁচে নেই। এর জন্য কতদিন সময় লেগেছে সেটা বড় বিষয় নয়। কোথায় লুকিয়ে ছিল সেটাও কোনও ব্যাপার নয়। তুমি যদি আমেরিকার জনগণের জন্য হুমকি হও, তাহলে আমেরিকা তোমাকে খুঁজে বের করবে।’

আফগানিস্তানের শাসক দল তালেবানের পক্ষ থেকেও রবিবার দেশটিতে মার্কিন ড্রোন হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তালেবানের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, কাবুলের একটি আবাসিক এলাকায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তিনি এই হামলাকে আন্তর্জাতিক রীতিনীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

১৯৫০ সালে মিসরের এক ধনাঢ্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আয়মান আল জাওয়াহিরি। জঙ্গিবাদী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ার আগে তিনি মূলত একজন সার্জন ছিলেন। বারবার কারাবরণ ও নিপীড়নের মুখে এক পর্যায়ে পাকিস্তানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে মুজাহিদিন যোদ্ধাদের সংগঠিত করেন। পরিচয় হয় সৌদি পৃষ্ঠপোষক ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে। উভয়ে মিলে গড়ে তোলেন আল কায়েদা। ২০১১ সালে পাকিস্তানে এক অভিযানে লাদেনকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন জাওয়াহিরি। তাকে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তারিখে যুক্তরাষ্ট্রে চালানো হামলার মূল রূপকার বলে মনে করেন অনেকে।

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ২২ ‘মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসী’ তালিকায় দুই নম্বরে তার নাম ছিল। এক নম্বরে ছিল ওসামা বিন লাদেনের নাম। সে সময় জাওয়াহিরির মাথার জন্য ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।