কুলাউড়া-বরমচাল রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যবর্তী ফানাই-আনফানাই নদীর ব্রিজের পাশে রেললাইনে বন্যার পানি উঠেছে। ফলে যে কোন সময় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বুধবার (২২ জুন) থেকে গতি কমিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে ট্রেন। উপজেলা জুড়ে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে নতুন করে আরো বাড়ী ঘর, সড়ক ও বাজার প্লাবিত হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে বাড়ছে বানভাসি মানুষের চাপ। ধারণ ক্ষমতার বেশি মানুষও উঠেছেন অনেক আশ্রয় কেন্দ্রে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও বরমচাল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইছহাক চৌধুরী ইমরান জানান, বরমচালের ফানাই-আনফানাই নদীর মধ্যবর্তী এলাকার ওই স্থানের প্রায় ২শ’ ফুট রেললাইনে সোমবার বিকেল থেকে পানি উঠতে শুরু করে। মঙ্গলবার রাতে প্রবল বর্ষণের পর ট্রেন চলাচল করছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে। এখন সময় যতই যাচ্ছে ততই বাড়ছে পানি। ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে ওই স্থানের রেললাইন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যেভাবে বন্যার পানি বাড়ছে তাতে এখন গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে পানি বাড়তে থাকলে সারাদেশের সাথে সিলেট অঞ্চলের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা করছেন। গেল কয়েক দিন থেকে টানা ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হাকালুকি হাওরের তীরবর্তী কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার অধিকাংশ এলাকা বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এখনো অব্যাহত থাকায় বন্যায় অতীতে সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ঠাঁই নেই।
হাওরের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় রেললাইনের ওই স্থানসহ কুলাউড়ার বিভিন্ন স্থানের রেললাইনে পানি উঠায় নতুন করে দুশ্চিন্তায় ফেলছে স্থানীয় বাসিন্দাসহ রেল যাত্রী ও রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা।
বরমচাল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. সাজ্জাদ আলী সাজু ও মিজানুর রশিদ সুমন জানান, ফানাই-আন ফানাই নদী এলাকায় ওই স্থানটিতে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকালের তুলনায় পানি আজকে দুপুর পর্যন্ত অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা বলেন, এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ওই স্থানটি দিয়ে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন মাস্টার মুহিবুর রহমান জানান, গেল ৩ দিন থেকে বন্যার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। রেললাইনের ১ ইঞ্চি উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানির স্ত্রোত কম থাকায় গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচল অব্যাহত রয়েছে। তবে আর পানি কিংবা স্ত্রোত বাড়লে ট্রেন চলাচল অব্যাহত রাখা যাবে কিনা তা বলা মুশকিল।
তিনি আরও জানান, রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের সংশ্লিষ্টরা ইতোমধ্যে জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন। তাদের পরামর্শনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে গেল কয়েক দিনের পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টি কারণে কুলাউড়া থেকে শমশেরনগর ও কুলাউড়া থেকে মাইজগাঁও পর্যন্ত গতি কমিয়ে ট্রেন চলাচলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।