সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের কৃষকদের কাছে সরিষা আবাদে আগ্রহ বাড়ছে। এর ফলে পতিত পড়ে থাকা জমি গুলো সরিষা চাষ করে কাজে লাগানো হচ্ছে। প্রতিবছরই এই জেলায় আবাদ বাড়ছে সরিষার। বিগত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর বেশি জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ধরা হয়েছে ৬৫ কোটি টাকা।
হাওরপারে যত দূর চোখ যায়, সেদিকেই হলুদ ফুলের গালিছা। জেলার প্রায় প্রতিটি অনাবাদি জমিতে সবুজ সরিষা গাছের মাথায় হলুদ ফুলের মনোমুগ্ধকর সম্ভার। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় হাওরের জেলা সুনামগঞ্জ জেলায় সরিষার চাষ বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর সরিষার চাষ করে দাম ভালো পাওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে।
ঐ সকল অনাবাদি জমিতে ধান উৎপাদনে ব্যায় বেশি হওয়ার ফলে কৃষক জমি গুলো ফেলে রাখতেন। যার ফলে জমি গুলো চাষ না হওয়ায় কোনও প্রকার ফসলই উৎপাদন হত না। কিন্ত বর্তমানে সরিষা চাষ করার জন্য এই জমি গুলো কাজে লাগছে। আর সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি বিভাগ এ ব্যাপারে সারা জেলায় তাদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের সরিষা চাষে উৎসাহিত করছে।
সেই সাথে দরিদ্র কৃষকদেরকে সার ও বীজ দিয়ে সহযোগীতা করা হচ্ছে। যাতে করে সরিষা চাষে অন্যদেরও আগ্রহ বাড়ে।
চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার কৃষক ৪ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। যেখান থেকে ফলন উৎপাদন হয়েছে ৫ হাজার ৪শ মেট্রিকটন যার আনুমানিক বাজার মূল্য ধরা হয়েছে ৬৫ কোটি টাকা। অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে সরিষার ভালো দাম পাওয়া খুশি চষীরা।
চলতি মৌসুমে সরিষা ক্ষেতের পাশ থেকে বক্স পদ্ধতির মাধ্যমে মধু উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৯১০ লিটার। যার বাজার মূল্য সাড়ে ৪ লাখ টাকা।
কৃষক সবুজ মিয়া বলেন, দুই তিন বছর যাবৎ সরিষা চাষ করছি এতে আমি ভালই লাভবান হয়েছে। একই সাথে চলতি মৌসুমেও সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করে ফলন ভাল ফলন পেয়েছি। ধান থেকে বর্তমানে সরিষা চাষে লাভ বেশি। বাজার দরও অনেক বেশি। অন্য কৃষকরাও যদি আমার মতও করে সরিষা চাষ করে তা হলে তারাও লাভবান হতে পারবে।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, সরিষার আবাদ বাড়াতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ধীরে ধীরে ধানের সরিষা চাষেও ঝুকছে এই এলাকার কৃষকরা। সরিষা চাষ বৃদ্ধি পাওয়ায় অনাবাদি জমি গুলোও কাজে লাগছে।