সিলেট-তামাবিল সড়কে বাস বর্জনে একাট্টা জৈন্তিয়া ১৭ পরগণা

সিলেট-তামাবিল-জাফলং, সিলেট-কানাইঘাট ও সিলেট-গোয়াইনঘাট সড়কে যাত্রীবাহী বাস-মিনিবাস বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে সর্বস্থরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসাথে বৈঠকে জৈন্তিয়া ১৭ পরগনার পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাস বয়কট কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বিকেল ৩টায় জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত জৈন্তিয়া ১৭ পরগনা সালিশ সমন্বয় কমিটি এ আহ্বান আহ্বান জানায়।

বৈঠক থেকে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম-কে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়াসহ তিনটি দাবীতে সিলেট-তামাবিল সড়কে বাস-মিনিবাস বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে সর্বস্থরের জৈন্তিয়াবাসির প্রতি আহ্বান করা হয়।

সভায় আগামী রোববার পরবর্তী বৈঠক করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈঠকের আগ পর্যন্ত বাস বর্জন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানান ১৭ পরগনা সালিশ সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জৈন্তিয়া ১৭পরগনা সালিশ সমন্বয় কমিটির সভাপতি আবু জাফর আবুল মৌলা চৌধুরী। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন।

এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমদ, গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, কানাইঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন, গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মাওলানা গোলাম আম্বিয়া কয়েস, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান মুহিবুল হক মুহিব, গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান এডভোকেট জামাল উদ্দিন, জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম লিয়াকত আলী, এডভোকেট মোহাম্মদ আলী, পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান (লেবু), জৈন্তাপুর ইমরান আহমদ মহিলা সরকারী কলেজের সহকারী অধ্যাপক শাহেদ আহমদ, গোয়াইনঘাট উপজেলার আলীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, নিজপাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ইন্তাজ আলী, জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম, চারিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতান করিম, দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার, ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক আহমদ, চিকনাগুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান চৌধুরী, গোয়াইনঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সুমন, পশ্চিম জাফলং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মামুন পারভেজ, ডৌ-বাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম নিজাম উদ্দিন, ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন, চারিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহ আলম চৌধুরী তোফায়েল, বড় চতুল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হোসাইন চতুলী, ঝিঙ্গাবাড়ি এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বী আব্দুস সালাম, বিশিষ্ট সমাজসেবী হোসাইন আহমদ, দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এনায়েত উল্লাহ, চিকনাগুল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবি এম জাকারিয়া, জৈন্তিয়া ছিন্নমূল সংস্থা (জেছিস)’র নির্বাহী পরিচালক এটি এম বদরুল ইসলাম, জৈন্তাপর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, বিশিষ্ট সমাজসেবী মো. আজব আলী (সেট), বিশিষ্ট মুরব্বী মাস্টার নাজিম উদ্দিন আলমাস, তাহির আলী (কলাই), জাসদ সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক গিয়াস আহমদ, জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হানিফ মোহাম্মদ, প্রচার সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, গোয়াইনঘাট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মনজুর আহমদ, সমাজসেবী আব্দুল মতিন শাহীন, মাওলানা মুহিবুল হক, জৈন্তাপুর প্রেসক্লাব সভাপতি নূরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি ফয়েজ আহমদ, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ফারুক আহমদ, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কুতুব উদ্দিন, মাওলানা কবির আহমদ, মাসহুদ আজহার, গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম।

এছাড়া বৈঠকে তিন উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ ছাত্র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বাস-মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষে ঘটনার বিষয়ে নিষ্পত্তির প্রস্তাব দেওয়া হলে পরবর্তী সভায় আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে তাদের-কে জানানো হয়।

এদিকে তামাবিল-জাফলং মহাসড়কে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি যাত্রীবাহী বাস চলাচল করলেও সাধারণ জনগণ ১৭ পরগণার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বাস বর্জন কর্মসূচি পালন করেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ জুলাই শুক্রবার রাতে সিলেট তামাবিল জাফলং মহাসড়কের দরবস্ত এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে জৈন্তিয়া ১৭ পরগনা ও সিলেট বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিকদের মধ্যে এই বিরোধ সৃষ্টি হয়।

এদিকে, সিলেট-তামাবিল সড়কে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে সিলেট জেলা পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) এই স্মারকলিপি প্রদান করে সিলেটের পরিবহন সংশ্লিষ্ট সংগঠনটি।

স্মারকলিপিতে পরিবহন নেতারা অভিযোগ করেন, সিলেট-তামাবিল সড়কের দরবস্ত এলাকায় চলাচলকৃত বাস আটকে যাত্রী নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করা হলেও প্রতিকার মিলছে না। এমন অবস্থায় আগামী শনিবার পর্যন্ত যদি পরিস্থিতির উত্তরণ না হয় তাহলে কেন্দ্রীয় মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।