সিলেটে নানা আয়োজনে আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস-২০২৩ উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে নগরীর রোজভিউ হোটেলে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর জরিপ ও পরিদর্শন) মো. মাহমুদুর রহমান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কাস্টমস রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় ঝুঁকি ও চোরাচালান প্রতিরোধ, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, বাণিজ্য সহজীকরণ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, দেশীয় শিল্পের বিকাশ ও রপ্তানি উন্নয়ন সর্বোপরি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে দেশীয় অবস্থান সুসংহতকরণ ও স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেটের কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, কর্নেল জিএইচএম সেলিম হাসান, বিজিবিএম, পিএসসি, জি+, সেক্টর কমান্ডার, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, সেক্টর সদর দপ্তর, সিলেট; কর অঞ্চল সিলেটের কর কমিশনার সৈয়দ জাকির হোসেন, দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাহমিন আহমদ, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি মাওলানা খায়রুল হোসেন এবং সিলেট উইমেন্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি স্বর্ণলতা রায়।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেটের যুগ্ম-কমিশনার মো. জাহাঙ্গীর আলম
‘Nurturing the Next Generation: Promoting a Culture of Knowledge-sharing and Professional Pride in Customs’ এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এবারের আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেটের অতিরিক্ত কমিশনার মুহাম্মদ রাশেদুল আলম বলেন, বিশ্ববাণিজ্যের উন্নয়ন সহজীকরণ, সরলীকরণ, উদারীকরণ এবং কার্যকর সীমান্ত ব্যবস্থাপনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই দিবস পালন করা হয়। ১৯৫৩ সালের ২৬ জানুয়ারি ১৭টি প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য দেশ নিয়ে বেলজিয়ামের ব্রাসেলস শহরে World Customs Organization এর আদি প্রতিষ্ঠান Customs Co-operative Council (CCC) এর প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সেই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই ২০০৯ সাল থেকে ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশন (ডব্লিউসিও) ২৬ জানুয়ারিকে আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউসিও) সদস্যভুক্ত ১৮৪টি দেশে একযোগে এই দিবসটি পালন করা হয়। বাংলাদেশও সংস্থাটির সদস্য হিসেবে দিবসটি পালন করছে।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, কাস্টমস ব্যবস্থাপনায় তথ্যপ্রযুক্তির সফল প্রয়োগ, আধুনিক ও স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা, উদ্ভাবনী পদ্ধতির প্রয়োগ এবং আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ অংশীজনের পারস্পরিক মিথষ্ক্রিয়ায় বৈশ্বিক করোনার প্রভাবকে মোকাবেলা করে শক্তিশালী অর্থনৈতিক কাঠামো গঠনে কাস্টমস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কাস্টমস তথা রাজস্ব বিভাগ তার সামগ্রিক প্রচেষ্টায় অর্থনীতির ক্ষতি পুষিয়ে নতুনভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও বৃদ্ধি এবং টিকে থাকার লড়াইয়ের মাধ্যমে টেকসই সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।
বক্তারা আরও বলেন, মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও দেশে কাস্টমসের কার্যক্রম বন্ধ ছিল না। এই সময়ে ‘ফ্রন্টলাইনার’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কাস্টমসের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
পরিশেষে সভার সভাপতি মোহাম্মদ আকবর হোসেন বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে কাস্টমসের সাম্প্রতিক বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রকল্প সম্পর্কে তুলে ধরেন এবং সভায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।