বন্যাদুর্গত এলাকায় এক-তৃতীয়াংশ মোবাইল টাওয়ার সচল হয়েছে। সোমবার (২০ জুন) পর্যন্ত মোবাইল অপারেটরদের প্রচেষ্টায় ১ হাজার ১৪৬টি টাওয়ার সচল করা সম্ভব হয়েছে। অবশিষ্ট ৯৭৬টি সাইট সচল করার প্রচেষ্টা এখনও অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসি।
সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার বন্যাদুর্গত এলাকায় ৪ মোবাইল ফোন অপারেটরের ৩ হাজার ৬১৭টি টাওয়ারের মধ্যে বেশির ভাগ অচল হলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এলাকাগুলো।
মঙ্গলবার (২১ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি আরও জানায়, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনাসহ সিলেট বিভাগের অন্যান্য এলাকায় আইএসপি অপারেটরদের নেটওয়ার্ক অপারেশন্স সেন্টার, পয়েন্ট অব প্রেজেন্স ( পিওপি) এর স্থাপনা প্লাবিত হওয়ার কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় সেগুলোতে পোর্টেবল জেনারেটর ব্যবহার করে স্থাপনাগুলোকে সচল রাখা হচ্ছে। জেলার কিছু পিওপিতে অতিরিক্ত জেনারেটরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আইএসপি (ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান) সার্ভিস সচল রাখার চেষ্টা চলছে।
এসব এলাকায় ১৫টি আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) অপারেটরের ৪৮টি পয়েন্ট অব প্রেজেন্স’র বেশিরভাগই চালু আছে। বন্যার কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ইন্টারনেট সংযোগে সাময়িক বাধাগ্রস্ত হয়। যেসব পিওপতে প্রবেশ করা যাচ্ছে, সেসব পিওপিতে পোর্টেবল জেনারেটর দিয়ে পরিষেবা প্রদান করা হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এনটিটিএন (ভূ-গর্ভস্থ ক্যাবল সেবা) অপারেটরদের মধ্যে সামিট কমিউনিকেশনস লিমিটেডের ২৬২টি পিওপি’র ১৩৭টি সচল রয়েছে। অপরদিকে, বাহন লিমিটেডের ২৯টি ও ফাইবার অ্যাট হোম লিমিটেডের ছাতকের (সুনামগঞ্জ) পিওপি বাদে সবগুলো পিওপি চালু আছে।
সিলেট বিটিসিএল’র (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড) সংযোগ বন্ধ থাকায় টানা দুই দিন প্রচেষ্টার পরে ১৯ জুন দুপুর ২টায় জেনারেটর কক্ষের পানি পাম্প করে বের করে টেলিটকের জেনারেটর ব্যবহার করে ঢাকার টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরায় চালু করা সম্ভব হয়। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় বিদুৎ না থাকায় টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা আপাতত বন্ধ রয়েছে। জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলায় বন্যার কারণে অপটিক্যাল ফাইবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখানকার টেলিযোগাযোগও বন্ধ রয়েছে।
সুনামগঞ্জে বিটিসিএল এর নেটওয়ার্ক ডাউন রয়েছে। অপরদিকে, সিলেটের অন্যান্য উপজেলায় টেলিযোগাযোগ চালু আছে। মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি উপজেলা ছাড়া সবকয়টি উপজেলায় এবং হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলা ছাড়া সবকটি উপজেলায় টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা চালু আছে।
আজ (মঙ্গলবার) সুনামগঞ্জে বিটিসিএল’র নেটওয়ার্ক সচল করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার সুনামগঞ্জে সেনাবাহিনীর কাছে ১২টি ভিস্যাট (ভেরি স্মল অ্যাপারেটার টার্মিনাল) পাঠানো হয়েছে, যার মধ্যে হাইটেক পার্ক ক্যাম্পে একটি, সুনামগঞ্জ ডিসি’র কার্যালয় একটি এবং সার্কিট হাউজে একটি করে চালু করা হয়েছে। আর সিলেটে ২৩টি ভিস্যাট পাঠানো হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে গত রবিবার। সিলেট বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে একটি ভিস্যাট স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া আরও দুটি ভিস্যাট স্থাপনের কার্যক্রম চালু রয়েছে।