মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ায় ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৫৩ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। এছাড়া এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় মরুময় প্রদেশ হোমসে এই হামলা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য সামনে আনে। একইসঙ্গে এই হামলার জন্য জিহাদি জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে দায়ী করেছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলায় নিহত বেসামরিক লোকদের মরদেহ পালমিরা প্রাদেশিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের প্রধানকে উদ্ধৃত করে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সানা জানিয়েছে, পালমিরা প্রাদেশিক হাসপাতালে নেওয়া নিহতদের সবারই মাথায় গুলির ক্ষত রয়েছে।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, নিহত ওই ব্যক্তিরা মরুভূমিতে ট্রাফল (মাটির নিচে জন্মায় এবং রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয় এমন ছত্রাক বা ছাতা) সংগ্রহ করার সময় তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। যদিও হোমস প্রদেশ সিরীয় সরকার ও তার মিত্রদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল বলে পরিচিত।
রয়টার্স বলছে, হামলায় আহত পাঁচজনকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া হামলায় বেঁচে যাওয়া একজন সানাকে বলেছেন, আইএস তাদের গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে।
অবশ্য হামলার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে কেউ এখনও দায় স্বীকার করেনি।
এদিকে বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মরুভূমিতে ট্রাফল সংগ্রহের সময় হোমস প্রদেশের আল-সোখনা শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমে আইএসআইএসের সন্ত্রাসীদের আক্রমণে ৫৩ জন নিহত হয়েছেন বলে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে।
পালমিরা হাসপাতালের পরিচালক ওয়ালিদ অডি জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে ৪৬ জন বেসামরিক নাগরিক এবং সাতজন সেনা সদস্য।
সিরিয়ার সরকারপন্থি রেডিও স্টেশন শাম এফএমকে অডি বলেছেন, কয়েক ডজন মানুষকে লক্ষ্য করে চালানো এই হামলায় নিহতদের মৃতদেহ ‘হাসপাতালে আনা হয়েছে।’
ব্রিটেন-ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসও শুক্রবার হামলার কথা জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যম আল আরাবিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংস্থাটি বলেছে- ‘শুক্রবার পালমিরা অঞ্চলের সোখনায় ট্রাফল সংগ্রহের সময় আইএসআইএস ৩৬ জনকে হত্যা করেছে।’
তবে অন্যরা হামলার শিকার হওয়া থেকে পালাতে সক্ষম হয়েছে বলে অবজারভেটরি জানিয়েছে।
এএফপি বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিরিয়ার মধ্য, উত্তর-পূর্ব এবং পূর্বাঞ্চলে ট্রাফল সংগ্রহের সময় নারী ও শিশুসহ অনেক লোককে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, গত শনিবার একই এলাকায় চোরাচালানকারীদের লক্ষ্য করে চালানো একই ধরনের হামলায় ১৬ জন নিহত হয়েছিল। নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
এছাড়া ওই হামলায় আরও কয়েক ডজন মানুষকে অপহরণ করা হয় উল্লেখ করে অবজারভেটরি বলেছে, তাদের মধ্যে ২৫ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তবে অন্যদের ভাগ্যে ঠিক কী ঘটেছে তা এখনও অজানা।