সিলেট সিটি কর্পোরেশনকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত করাসহ সাত দফা দাবিতে সিলেটের প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলসমূহের উদ্যোগে সোমবার (৬ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রতিবাদী বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশন জনগণের সেবা প্রদানকারী একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু অদ্যাবধি নগরবাসী কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত রয়েছে। অপরদিকে বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি ও সংগ্রামকে ধারণ না করে উন্নয়নের নামে পশ্চাৎপদতাকে লালন করার অপচেষ্টা হচ্ছে। অতিসম্প্রতি সর্বগ্রাসী বাণিজ্যিকীকরণ মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ লক্ষণীয়। সিলেট সিটি কর্পোরেশনকে জনগণের কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
সিপিবি সিলেট জেলা শাখার সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে ও বাসদ জেলা আহ্বায়ক আবু জাফরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন গণতন্ত্রী পার্টি জেলা সভাপতি মো. আরিফ মিয়া, সিপিবি সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন, জাসদ জেলা সাধারণ সম্পাদক কে এ কিবরিয়া চৌধুরী, জাসদ মহানগর সাধারণ সম্পাদক গিয়াস আহমদ, সাম্যবাদী দলের অধ্যক্ষ ব্রজগোপাল চৌধুরী, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের জেলা সম্পাদক সিরাজ আহমদ, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা নেতা দীনবন্ধু পাল, বাসদ জেলা সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা নেতা অ্যাডভোকেট হুমায়ুন রশীদ শোয়েব, সাম্যবাদী আন্দোলনের জেলা সদস্য অ্যাডভোকেট মহীতোষ দেব মলয় ও উদীচী জেলা সংসদের সভাপতি এনায়েত হাসান মানিক।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন সিপিবি জেলা সভাপতি সৈয়দ ফরহাদ হোসেন, জাসদ জেলা সহ-সভাপতি সৈয়দ আনছার আলী, গণতন্ত্রী পার্টি জেলা সাধারণ সম্পাদক জুনেদুর রহমান চৌধুরী, সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান, জাসদ মহানগর যুগ্ম-সম্পাদক আমিরুল ইসলাম ইয়াহিয়া, জাসদ জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাছিব চৌধুরী, যুক্তরাজ্য জাসদ নেতা মাহমুদুর রহমান শানুর, খেলাঘর জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক তপন চৌধুরী টুটুল, চা শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হৃদেশ মোদী, শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের প্রসেনজিৎ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের জাহেদ আহমদ, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমদ, ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাসুদ রানা, ছাত্র ইউনিয়নের মনীষা ওয়াহিদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের মনিষ কান্তি রায় প্রমুখ।
সমাবেশ থেকে ৭ দফা দাবি বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। দাবিগুলো হলো :
সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার বাস্তবায়ন পরিষদ কর্তৃক সিলেট সিটি কর্পোরেশনকে যে সুনির্দিষ্ট শর্তাধীনে শহীদ মিনার রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল সিলেট সিটি কর্পোরেশনকে তা মেনেই শহীদ মিনার রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করতে হবে। শহীদ মিনার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মূল নকশা বহির্ভূত সকল স্থাপনা অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। সিটি কর্পোরেশনের হোল্ডিং ট্যাক্স, পানির বিল ও ট্রেড লাইসেন্স ফি কমাতে হবে। নগরীর জলাবদ্ধতা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘস্থায়ী সমাধানকল্পে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সময়মতো মশক নিধন ও সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্গত সকল ওয়ার্ডে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের সহজলভ্য ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে। মানুষের সুস্থ বিকাশ, উন্নত দেশপ্রেমিক জাতি গঠন ও চিত্ত বিনোদনের জন্য নগরীর ৪২টি ওয়ার্ডে পাঠাগার নির্মাণ, কালচারাল সেন্টার ও ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ করতে হবে এবং অবিলম্বে শারদা স্মৃতি ভবন, পীর হবিবুর রহমান স্মৃতি পাঠাগার ও লোকনাথ-পার্বতী টাউন হল খুলে দিতে হবে। নগরীর সৌন্দর্যবর্ধনের ক্ষেত্রে আবহমান বাঙালি সংস্কৃতি, মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমৃদ্ধ ব্যবস্থাপনা নির্মাণ করতে হবে।