সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এমএ মান্নান ইস্যুতে উত্তাল সুনামগঞ্জ। গত বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে শান্তিগঞ্জের হিজলবাড়ি (নিজ বাড়ি) হতে গ্রেপ্তারের পর থেকেই মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে দু’টি পক্ষ।
গ্রেপ্তারের পর থেকেই নিজ এলাকার একটি পক্ষ তাঁর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছিলেন। এদিকে আজ (২২ সেপ্টেম্বর) এমএ মান্নানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শান্তিগঞ্জের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। শত শত শিক্ষার্থীরা সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে অবস্থান করে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
অন্যদিকে, মান্নানের ফাঁসিসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সুনামগঞ্জ জেলা সদরে বিক্ষোভ করেছে বিএনপি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলেন শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অভিযোগে তাঁর সর্বোচ্চ শাস্তি চান বিএনপি নেতাকর্মীরা।
গ্রেপ্তারের পরদিন (২০ সেপ্টেম্বর) সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফারহান সাদিক মান্নানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পর থেকেই তাঁর পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেয় দুটি পক্ষ। মন্ত্রীর নিজ এলাকার মানুষ তাঁর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করছে। অন্যদিকে তাঁর শাস্তির দাবি করছে অন্য একটি পক্ষ।
শিক্ষার্থীদের দাবি, সুনামগঞ্জে উচ্চ শিক্ষার দ্বার উন্মোচনের ক্ষেত্রে এম এ মান্নানের নানামূখী উন্নয়নের শেষ নেই। সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, শিল্প ও কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক), আজিজুন নেছা ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গড়ার একমাত্র কারিগর তিনি। এমএ মান্নান একজন সৎ, আদর্শবান, স্বজ্জন ও প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ। তাই নিঃশর্তে তাঁর মুক্তি চান সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে, মান্নানসহ ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া সকল আওয়ামী নেতাকর্মীদের শস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা।
তাঁরা বলছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রেক্ষিতে যে আন্দোলন করেছিলেন সেই আন্দোলনে আওয়ামী লীগসহ তার অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়ে নৃশংশভাবে হত্যা করেছে। সুনামগঞ্জেও এর বিপরীত নয়। হামলায় জেলার প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীরা আহত হন বলেও দাবি তাঁদের। তাই সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নানসহ শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চান তাঁরা।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট সুনামগঞ্জে ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের যৌথ হামলায় অসংখ্য শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ দোয়ারাবাজার উপজেলার এরোয়াখাই গ্রামের হাফিজ আহমদ বাদী হয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর এম এ মান্নানসহ ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে এম এ মান্নানকে তাঁর নিজ বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।