সাংবাদিকদের কাজের জন্য বিপজ্জনক দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম এসেছে। সবচেয়ে বিপজ্জনক নয়টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছে বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)।
এ বছর সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক নয়টি দেশের মধ্যে শীর্ষে আছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের নাম। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ পাকিস্তান। এ বছর সেখানে সাত জন সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন। এর পরই আছে বাংলাদেশের নাম, যেখানে হত্যা করা হয়েছে পাঁচ জন সাংবাদিককে।
‘২০২৪ রাউন্ড আপ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে জানানো হয়, এ বছর পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রেকর্ড ৫৪ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে যুদ্ধ বা সহিংসতার চলছে এমন এলাকায়। বিশেষ করে ইরাক, সুদান, মিয়ানমার, ইউক্রেন ও গাজার যুদ্ধক্ষেত্রও রয়েছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এরকম এলাকায় সাংবাদিকদের নিহতের সংখ্যা এবারই সর্বোচ্চ (৫৭ দশমিক ৪ শতাংশ)।
তালিকায় সবচেয়ে বিপজ্জনক বিবেচনায় যেসব দেশের নাম আছে–– ফিলিস্তিন (১৬ সাংবাদিক নিহত), পাকিস্তান (৭ জন), বাংলাদেশ (৫ জন), মেক্সিকো (৫ জন), সুদান (৪ জন), মিয়ানমার (৩ জন), কলম্বিয়া (২ জন), ইউক্রেন (২ জন), লেবানন (২ জন)।
আরএসএফের ডিরেক্টর জেনারেল তিবো ব্রুটিয়েন জানান, ‘এই সাংবাদিকরা মারা যাননি, তাদের হত্যা করা হয়েছে। যারা বন্দি, তাদের ক্ষমতাসীনরা আটকে রেখেছে। যারা নিখোঁজ, তাদের অপহরণ করা হয়েছে। এসব অপরাধ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘটেছে বিভিন্ন সরকার বা পুরোপুরি দায়মুক্তি পাওয়া সশস্ত্র বাহিনীগুলোর হাতে। এসব ঘটনা বিচার না হওয়া আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।’
মানুষকে তথ্য দেওয়ার জন্য যারা কাজ করছে তাদের ওপর হামলা-সহিংসতা ঠেকানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আরএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক অঞ্চল ছিল গাজা। বিশ্বে এবছর যত সাংবাদিককে দায়িত্ব পালনের সময় হত্যা করা হয়েছে তার ৩০ শতাংশই ঘটেছে গাজায়, আর তাদের প্রায় সবাইকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিন এখন সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ। গত পাঁচ বছরে অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে এ বছর ফিলিস্তিনে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা সর্বোচ্চ। ২০২৩ সালে অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ফিলিস্তিনে ১৪৫ জনেরও বেশি সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে দায়িত্ব পালনকালে টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছে অন্তত ৩৫ জনকে।
আগের চেয়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়েছে এবং এ বছর কাজ করতে গিয়ে যত সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে তাদের প্রায় অর্ধেকই মারা গেছেন যুদ্ধক্ষেত্রে।