সংবিধানকে কুক্ষিগত করে রেখেছে আ.লীগ : সিলেটে আমির খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের সংবিধানকে দলীয় দলিলে পরিণত করেছে। দল, পরিবার ও ধারাবাহিক ক্ষমতা দখলের জন্য সংবিধানকে কুক্ষিগত করে রেখেছে তারা। সংসদীয় গণতন্ত্রের মৌলিক বিষয়গুলো তারা পরিবর্তন করে দিয়েছে। যাতে ক্ষমতায় থেকেই নির্বাচন করতে পারে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েই এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ যে গর্তে পড়েছে, তা থেকে তুলে আনার জন্য ২৭ দফা দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনাসহ অনির্বাচিত কিছু লোক দেশ দখল করে আছে, তারা দেশ ছেড়ে চলে গেলে কোন পথে যাবে বাংলাদেশ, তার রূপরেখা হচ্ছে এই ২৭ দফা।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিকেলে সিলেট জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিএনপি ঘোষিত ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ শীর্ষক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণমূলক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হাইকোর্টের নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, হাইকোর্টের নির্বাচন শেখ হাসিনার কফিনে শেষ প্যারেক। কারণ বিশ্ববাসীর কাছে প্রমাণ হলো দেশে কোনো ফেয়ার নির্বাচন হবে না।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জনগনকে সাথে নিয়ে সংবিধান পরিবর্তন করা হবে। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদীয় ব্যবস্থা দেশের রাজনীতির আমূল-পরিবর্তন আনবে বলেও দাবি করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, রাজনীতির সাথে পেশাজীবীদের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা কাজে লাগাতে পারলে রাজনীতিতে নতুন ডাইমেনশন আসবে। জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশের বয়স ৩০ বছরের নিচে। এদের চিন্তার প্রতিফলন ঘটাতে পারলে আগামীর বিশ্বে বাংলাদেশ সমকক্ষ হবে। ২৭ দফার টার্গেট গ্রুপ এই ৬৫ শতাংশ মানুষ।

বাংলাদেশকে মেরামত করা জরুরি উল্লেখ করে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশকে যেখানে নেওয়া হয়েছে, তাতে মেরামত জরুরি। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। আজ একটা গোষ্ঠী সিদ্ধান্ত নেয়, কারা ব্যবসা করবে, কারা কারা চাকরি করবে। মুক্তবাজার অর্থনীতি নাই, চলছে পৃষ্ঠপোষকতার অর্থনীতি। সরকার যাদের পৃষ্টপোষকতা করে, তারা ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারছে। অন্যরা তা পারছে না।

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলন, জনসমাগম নিয়ে সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব নয়। এ অবস্থায় বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন থেকে সরে আসছে। আমরা চাই না সরকার কর্তৃক কেউ খুন, গুমের শিকার হোক। দেশে আইনের শাসন না থাকায় গুম খুনের বিচার হচ্ছে না।

সভায় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, রাষ্ট্রপতিসহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন প্রধানমন্ত্রী। একজনের নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্র ব্যবস্থা। প্রধানমন্ত্রী একক ক্ষমতা চালাচ্ছেন। রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখায় এটা নেই। ক্ষমতায় সামঞ্জস্য আসবে। পার্লামেন্টের এটা কালেকটিভ সিস্টেম।

আলোচনায় অংশ নেন জেলা শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিরা।