একদিকে জনে জনে পরিবেশন করে যাচ্ছে একের পর গান। সাথে তাল মিলিয়ে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে যাচ্ছেন যন্ত্রশিল্পীরা। অন্যদিকে গানের সাথে ঠোঁট মিলিয়ে – ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য মানবিক সাহায্যের আবেদন’ বাক্স হাতে নিয়ে একজন থেকে আরেকজনের কাছে ছুটে যাচ্ছেন কিছু তরুণ তরুণীরা। চায়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গলে এভাবেই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য মানবিক সাহায্যের আবেদন চেয়ে রাস্তায় নেমেছে শিল্পীরা।
চারদিন ধরে তারা এভাবেই শহরের রাস্তায় রাস্তায় গান গেয়ে বন্যার্তদের সহায়তার জন্য অর্থ সংগ্রহ করছেন। প্রথম দিন ২৭ জুন (সোমবার) বিকেল ৪ টায় দু’টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বন্যার্তদের সহায়তায় গান পরিবেশন করে। একটি গ্রুপ শহরের রেলওয়ে স্টেশনে ও আরেকটি গ্রুপ শহরের চৌমুহনা চত্বরে গান পরিবেশন করে।
শনিবার (২ জুলাই) বন্যার্তদের সহায়তায় সাহায্যের আবেদন চেয়ে তারা গান পরিবেশন করে শহরের গদারবাজার, রবিবার (৩ জুলাই) দু’টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বন্যার্তদের সহায়তায় গান পরিবেশন করে অর্থ সংগ্রহ করে। যার একটি গ্রুপ শহরের সাতগাঁও বাজারে ও আরেকটি গ্রুপ শহরের স্টেশন রোডের ঘরণীর সামনে গান পরিবেশন করে । শেষ পরিবেশন ছিল সোমবার (৪ জুলাই) শহরের চৌমুহনা চত্বরে। যেখানে শহরের পরিচিত শিল্পীরা গান গেয়ে বন্যার্তদের সহায়তায় সাহায্যের আবেদন চেয়ে তারা গান পরিবেশন করে।
আয়োজকের পক্ষ থেকে কণ্ঠশিল্পী সুমিত পাল জানান, ৪ দিনের মধ্যে প্রথম দিনে দুই গ্রুপ মিলে গান গেয়ে আমরা সংগ্রহ করেছি মোট ১০ হাজার ৪ শত ৫৮ টাকা। দ্বিতীয় দিন সংগ্রহ করেছি ৬ হাজার টাকা, তৃতীয় দিন বৃষ্টির কারণে তেমন সংগ্রহ না করতে পারলেও মাত্র আধা ঘণ্টায় আমরা সাড়ে ৩ হাজার টাকা সংগ্রহ করতে পেরেছি। আর আজকে শেষ দিন আমরা সংগ্রহ করতে পেরেছি ১৪ হাজার টাকা। তাছাড়া ভার্জুয়ালি আমাদের প্রোগ্রাম দেখে দেশ ও দেশের বাইরে থেকেও অনেকে সহযোগিতা করেছেন। সব মিলিয়ে এই ৪ দিনে আমরা ১ লাখ টাকার বেশি সংগ্রহ করতে পেরেছি।
সুমিত জানান, আসলে কিছু করতে হলে কাউকে না কাউকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হয়। সেই চিন্তা থেকে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে আমি উদ্যোগটা নিয়ে মাঠে নামি। আমাকে সহযোগিতা করেন তারেক ভাই। তারপর আমার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে একে একে শ্রীমঙ্গলের কণ্ঠশিল্পী ও বাদ্যযন্ত্র শিল্পীরা পাশে এসে দাঁড়ান। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া আসলে এরকম কিছু করা সম্ভব হতো না। এখন সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় বন্যার্তদের সহায়তায় তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াবো। আমার ইচ্ছে যেসব দুর্গম এলাকায় মানুষ যেতে পারেনা সেরকম জায়গায় পৌঁছে বন্যার্তদের সহায়তা করা।