শান্তিগঞ্জে রাস্তা বন্ধ করে ঘর নির্মাণ, বিপাকে আট পরিবার

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস গ্রামে আটটি পরিবারের দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা স্থায়ী ভাবে দখল করে পাকা দালান ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে খাস জায়গা বন্দোবস্ত পাওয়া রইছ উদ্দিন ও তার স্ত্রী পিয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে। রাস্তা বন্ধ করে ঘর নির্মাণকাজে বাঁধা দেওয়ায় রাস্তায় চলাচলকারী মহসিন উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজনকে হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের ।

এমতাবস্থায় রাস্তা দখলমুক্ত করতে রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী মহসিন উদ্দিন।

অভিযোগসূত্রে জানা যায়, জয়কলস গ্রামের মৃত ওয়ারিছ আলীর ছোট ছেলে মহসিন উদ্দিন চাকরীর সুবাদে ২০০৪ সাল থেকে সপরিবারে অন্যত্র বসবাস করে আসছেন। এ সুযোগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মহসিনের অগোচরে তার আপন বড় ভাই পৈতৃক রেকর্ডীয় বসতবাড়ির সামনের ডোবা ও দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তাসহ সামনের খাস জমি বন্দোবস্ত (মোকদ্দমা নং-২০/২০১৫-১৬ ইং মূলে ৪৫১/২ দাগের ২৬ শতাংশ) বন্দোবস্ত করে নেন। অভিযুক্ত রইছ উদ্দিন ও তার স্ত্রী পিয়ারা বেগম বন্দোবস্ত পাওয়ার পর থেকে সেখানে বসতঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেন। উল্লেখিত বন্দোবস্ত পাওয়া ভূমির উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ সীমানায় অভিযোগকারী মুহসিন উদ্দিনের রেকর্ডিয় ভূমি রয়েছে। তিনি মালিক হিসাবে জয়কলস মৌজার বন্দোবস্ত পাওয়া ভূমির উত্তর সীমানায় জেএল নং-২০৩, খতিয়ান নং-৭৮৮, দাগ নং-৪৩৭, পরিমাণ-১৫ শতাংশ, দক্ষিণ ও পশ্চিম সীমানায় দাগ নং-৪৩৬, ৪৩৭, পরিমান-০.২৪৭৫ শতাংশ ভূমি ভোগ দখলেও আছেন। অভিযুক্ত রইছ উদ্দিন ও পিয়ারা বেগম গত একবছর আগে অভিযোগকারী মহসিন উদ্দিন সহ প্রতিবেশী আটটি পরিবারের দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তা স্থায়ী ভাবে দখল করে পাকা দালান ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেন।

রাস্তা দখল করে পাকা দালান ঘর নির্মাণ কাজে বাঁধা ও চলাচলের রাস্তা বন্ধের বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েতের ব্যক্তিদের অবহিত করলে কিছুদিন কাজ বন্ধ রাখলেও পুনঃরায় রাস্তার অর্ধেক অংশ দখল করে টিনসেড ঘর নির্মাণ করেন অভিযুক্ত রইছ উদ্দিন। বর্তমানে অভিযোগকারী মহসিন উদ্দিন ও তার প্রতিবেশী আটটি পরিবারের উত্তর ও দক্ষিণ সীমানার দুইটি রাস্তাই অভিযুক্ত রইছ উদ্দিন ও তার স্ত্রী পিয়ারা বেগম বন্দোবস্ত নিয়ে ভোগ দখল করায় অভিযোগকারী মহসিন উদ্দিন সহ উল্লেখিত পরিবারের লোকজনদের চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে কয়েক দফা সমাধানের চেষ্টা করেও এই সমস্যার সমাধান মেলেনি। ফলে বাধ্য হয়ে মহসিন উদ্দিন শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রইছ উদ্দিন বলেন, আমি কোন রাস্তা বন্ধ করিনি। চলাচলের রাস্তাটি উন্মুক্ত আছে। রাস্তা বন্ধ না করে আমি দালান ঘর নির্মাণ করেছি।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার উজ জামান অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বন্দোবস্তকৃত ভূমিতে আমার জানামতে পাকা দালান ঘর নির্মাণ করার কোন অনুমতি নেই। তবে যদি কেউ রাস্তা বন্ধ করে পাকা দালান ঘর নির্মাণ করে তদন্তে প্রমাণিত হলে তার বন্দোবস্ত বাতিল করা হবে। ইতিমধ্যে সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশনা দিয়েছি।