সিলেটের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষক স্থপতি জেরিনা হোসেন এবং রাজন দাশকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন সিলেটের সম্মিলিত নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) বিকালে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গনে সিলেটের সম্মিলিত নাগরিক সমাজের ব্যানারে সিলেটের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষক স্থপতি রাজন দাশ এবং জেরিনা হোসেনকে ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০’ এর স্পষ্ট লঙ্ঘন করে বহিষ্কার করার প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে শিক্ষকদের পুনর্বহালের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এই হুশিয়ারী দেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর লঙ্ঘন করে দুর্নীতিবাজচক্র সম্পুর্ণ অগণতান্ত্রিক ও অন্যায়ভাবে দেশখ্যাত স্থপতি জেরিনা হোসেন এবং রাজন দাশকে বহিস্কার করার মধ্য দিয়ে লিডিং ইউনিভার্সিটিকে ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছে।
এই বহিস্কারাদেশের সাথে জড়িত কোষাধ্যক্ষ বনমালী ভৌমিক ও ট্রাস্টি বোর্ডের প্রশ্নবিদ্ধ সদস্যদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
এ ধরনের বহিস্কারাদেশ সিলেটের শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করার পাঁয়তারা উল্লেখ করে তাঁরা বলেন, প্রতিক্রিয়াশীল মানসিকতা ছাড়া এ ধরনের পাঁয়তারা শিক্ষা বান্ধব কোনো ব্যক্তিবর্গ করতে পারে না। নেতৃবৃন্দ ৭২ ঘন্টার মধ্যে এই বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করে পুর্নবহালের দাবি জানান। এই সময়ের মধ্যে পুর্নবহাল না করলে সম্মিলিত নাগরিক সমাজের ব্যানারে সিলেটবাসীকে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেওয়া হয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষকদের বহিস্কারের প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নানাধরণের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে এমনকি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে ইতিমধ্যে থানায় সাধারণ ডায়েরীও করা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, এধরণের হুমকি মামলার ভয় দেখিয়ে শিক্ষার্থী কিংবা সিলেটবাসীর আন্দোলনকে বন্ধ করা যাবে না। সিলেটবাসী এর আগেও অনেক হোমরা চোমরার রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে সকল যৌক্তিক আন্দোলনে সফল হয়েছে।
সিলেট জেলা জাসদের সভাপতি লোকমান আহমদের সভাপতিত্বে সিলেট চিত্রশিল্পী সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব শামসুল বাসিত শেরো ও সিলেট জেলা বাসদের সদস্য সচিব প্রনব জ্যোতি পালের সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন ও উপস্থিত ছিলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ বেদানন্দ ভট্টাচার্য্য্, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এটিএম হাসান জেবুল, বাসদ মার্কসবাদী সিলেট জেলার আহবায়ক উজ্জল রায়, নাট্যব্যক্তিত্ব অম্বরিস দত্ত, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি বিভাষ শ্যাম যাদন, শাবিপ্রবি অধ্যাপক জহীর বিন আলম, সাবেক ব্যাংকার প্রণতি ভট্টাচার্য্য, মইনুদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজের ইংরেজী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক পার্থ সারথী নাগ, বাংলাদেশ কমিনিস্ট পার্টি সিলেটের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আনোয়ার হোসেন সুমন, বাসদ সিলেট শাখার আহবায়ক আবু জাফর, জাসদ সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এ এ কিবরিয়া, গণতান্ত্রিক পার্টি সিলেটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলজার আহমদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি সিলেটের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান, বাংলাদেশ সাম্যবাদী আন্দোলনের সমন্বয়ক সুসান্ত সিনহা সুমন, জাসদ সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক গিয়াস আহমদ, বাংলাদেশ বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য সিরাজ আহমদ, সংক্ষুব্দ নাগরিক আন্দোলন সিলেটের সমন্বয়ক আব্দুল করিম কিম, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রিয় সহসভাপতি তারেক আহমদ চৌধুরী, আইনজীবী অরুপ শ্যাম বাপ্পী, শাবিপ্রবি স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষক স্থপতি শুভজিৎ চৌধুরী, সামশুল আরেফিন, স্থপতি সুব্রত দাস, গৌরপদ দে রবিন, আর্কিটেক্টচার সাস্ট এলামনাই এসোসিয়েশনের সহসভাপতি স্থপতি ওয়ালি উল্লাহ, ইমজার সভাপতি ও যমুনা টিভির ব্যুরো প্রধান মাহবুবুর রহমান রিপন, খবেরর কাগজের ব্যুরো প্রধান উজ্জল মেহেদী, গণ জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র দেবশীষ দেবু, ইমজার সাবেক সভাপতি দেবব্রত ঘোষ চৌধুরী, বাসদ সিলেট জেলা সদস্য জুবায়ের আহমদ চৌধুরী সুমন, সংস্কৃতিকর্মী বিপ্লব শ্যাম সুমন, গণতান্ত্রিক পার্টির সদস্য জুনেদুর রহমান, উদীচী সিলেটের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল মিন্টু, কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল হোসেন, বিপ্লবী কমিনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. হরিধন দাস, সাম্যবাদী দল সিলেটের সম্পাদক ব্রজগোপাল চৌধুরী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মনীষা ওয়াহিদ, গনতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি বিশ্বজিৎ শীল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সদস্য পিনাক দাস, নৃত্যশৈলী সিলেটের পরিচালক নিলাঞ্জনা জুঁই, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সদস্য সন্দীপন শুভ, আইনজীবী আব্দুল মুকিত অপি, বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ ও সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব নন্দী, চাকুরিজীবী নবেন্দু শেখর দাস, স্থপতি অমিতাভ দেবনাথ, স্থপতি আহমেদ আনহার, ইমজার সাবেক সভাপতি মইন উদ্দিন মনজু, ছাড়ামঞ্চের সভাপতি সিরাজ উদ্দিন শিরুল, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রিূয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো, মোজাহিদুল ইসলাম ভূইয়া, ব্যাংকার মো. শহীদ, ছাত্রফ্রন্টের সদস্য পিনাক দাস, চৌধুরী তামান হাবিব, ব্যবসায়ী আশরাফ চৌধুরী, ইমরান আহমদ, জাতীয় যুব জোট সিলেটের সভাপতি মুকুল আহমদ পুতুল, ভূমি সন্তানের সমন্বয়ক আশরাফুল কবীর, ব্যাংকার জয়মাল্য দাশ, ব্যাংকার সঞ্জয় মজুমদার, নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজের রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আবু ইউসুফ নাজিম, ব্যাংকার কামরান আহমদদ, ব্যাংকার তারেক আহমদ চৌধুরী, চাকুরীজীবী আহবাব আহমদ জায়গীরদার, রাহাত হোসেন চৌধুরী রাজু, ব্যবসায়ী শাহেদ আহমদ টিপু, ব্যবসায়ী বারিন্দ্র দাস সজীব, চাকুরীজীবী পপি দে, যুবগলীগ সদস্য সুমন বিন বাসিত, ব্যবসায়ী সাজ্জাদুর রহমান, নির্মাতা ও প্রযোজক উত্তম কুমার সিনহা, সাংবাদিক তালুকদার আনোয়ারুল ইসলাম পারভেজ, সাংবাদিক রাজন দাস, দিপু বৈদ্য, শামিম হোসেন সামি, সাকিব আহমদ মিটু, ব্যবসায়ী শাহেদ আহমদ, ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন চৌধুরী বাবলু, ব্যবসায়ী সুমন ভট্টাচার্য্য, রাহাত হোসেন চৌধুরী রাজু, ব্যবসায়ী মিটু খন্দকার, সাংবাদিক নয়ন নিমু, নয়াসড়ক ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসেন আহমদ, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক তাহমিদুল হাসান জাবেদ, ইন্সুরেন্স কর্মকর্তা অনামিকা দাস, প্রভাষক মিহির মোহন, ডা. সুব্রত তালুকদার পিংকু, সঞ্জিত হালদার, নাট্যকর্মী সৌমেন্দ্র সেন মিহির, ব্যবসায়ী মিষ্টু দত্ত, ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান আমিন, ব্যবসায়ী সৈয়দ আলী মাহবুব জাহিন, শিক্ষক স্থপতি কনক কান্তি সাহা, ব্যবসায়ী হাবিবুল্লাহ টিপু, ব্যবসায়ী তৌহিদ লতিফ সাকের, ব্যবসায়ী রিমন, লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগ এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি যশু রঞ্জন ভৌমিক, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আহসান শওকত, সদস্য মোস্তাক আহমদ তপু, মো. এহতেশামুল হক, মিনহাজুল আবেদিন, মাহমুদুর রহমান মিতুল, সিদরাতুল মুনতাহা মুনা, আলী আহসান, রাহুল চক্রবর্তী, হোসেন মোহাম্মদ দিদার, সৈয়দা মাইশা আদনিন চাকুরীজীবী সুজয়া দে, নবনীতা দাশ, উদ্যোক্তা অদিতি ধর তপা, তনিমা এস, দ্বৈপায়ন দাশ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০’ এর স্পট লঙ্ঘন করে অগণতান্ত্রিক ভাবে রাজন দাশকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষকদের অনৈতিকভাবে বহিষ্কারের পর থেকেই বহিষ্কারাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য, প্রশাসনের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার জন্যেই স্থাপত্য বিভাগের দুই শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে।