লাখাই উপজেলার বিভিন্ন মাঠ থেকে জমির ‘টপসয়েল’ বিক্রির মহোৎসব চলছে। এক শ্রেণির পরিবহন ব্যবসায়ী স্থানীয় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে তাদের জমির উপরিভাগের মাটি কেটে ট্রাকযোগে বিভিন্ন দূরবর্তী স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। এতে কমে যাচ্ছে জমির উর্বরাশক্তি। একইসাথে কমছে ফসল উৎপাদন।
জানা গেছে, কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে নামমাত্র মূল্যে ‘টপসয়েল’ কিনে নিয়ে ঠিকাদারেরা নতুন করে বাড়ি তৈরির জন্য ভিটায়, ছোট-বড় গর্ত ভরাট করার কাজে আগ্রহী ক্রেতাদের কাছে তা উচ্চমূল্যে বিক্রি করছেন। এতে পরিবহন ব্যবসায়ী ও আগ্রহী মাটি ক্রেতারা লাভবান হলেও দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকেরা।
কৃষিবিদদের মতে, কৃষকরা সাময়িকভাবে কিছু অর্থকড়ি পেলেও তাদের জমির টপসয়েল নিয়ে যাওয়ায় জমির উর্বরা শক্তি হ্রাস পায়। ফসল উৎপাদন কমে যায়। এতে ৩-৪ বছর জমিতে কাঙ্ক্ষিত ফলন না হওয়ার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পরিবহন ব্যবসায়ীরা প্রতি ট্রাক মাটির জন্য কৃষককে দিয়ে যাচ্ছেন ২ শত টাকা। ১ ট্রাক মাটি লোড-আনলোড বাবদ খরচ হয় ৩ শত টাকা। এই এক ট্রাক মাটি বিক্রি করতে পারে ১ হাজার টাকা। এতে পরিবহন ব্যবসায়ীর প্রতি ট্রিপে মুনাফা অন্তত ৫ শত টাকা।
এদিকে দিনব্যাপী শত শত মাটি বোঝাই ট্রাক গ্রামীণ ছোট-বড় সড়কগুলো বেপরোয়া গতিতে ব্যবহারের ফলে সড়কের ক্ষতি হচ্ছে। সড়কের আয়ুষ্কাল কমে যাওয়ার পাশাপাশি খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে। মাটি বোঝাই ট্রাক মাঠ থেকে যত্রতত্র উঠা-নামার ফলে সড়কের পার্শ্বদেশ ভেঙে পড়ছে। এতে যান ও জনচলাচলে নেমে এসেছে দুর্ভোগ।
এ ব্যাপারে নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ.এন.ও) নাহিদা সুলতানার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টি অবহিত হয়েছি। প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেওয়া হবে।’