রাজনা হত্যার বিচারের দাবিতে শান্তিগঞ্জে বিক্ষোভ

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার স্কুলছাত্রী রাজনা বেগম হত্যার বিচারের দাবীতে রাস্তায় নেমে এসেছে রাজনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুরমা হাইস্কুল এন্ড কলেজের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সামাজিক সংগঠন ‘বিজয় সমাজকল্যাণ সংস্থা’ এবং ওই এলাকার সাধারণ জনতা।

বুধবার (২৬ জুলাই) সকাল ১১ টায় পাথারিয়া বাজারে বিশাল মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচী পালন করেন তারা।

সুরমা হাইস্কুল এন্ড কলেজের আয়োজনে মানববন্ধনে প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও প্রভাষক মোস্তাহার মিয়ার পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নুর হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দুলন রাণী তালুকদার, পাথারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম, উপজেলা কৃষকলীগের আহবায়ক ফয়জুর রহমান, বিজয় সমাজ কল্যাণ সংস্থার সাবেক সভাপতি ফরিদ আহমদ, সমাজসেবী মোহাম্মদ আলী, মাওলানা মহিবুর রহমান প্রমূখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমাদের এলাকায় এরকম নৃশংস হত্যাকাণ্ড ইতিপূর্বে ঘটেনি। রাজনার এমন হত্যাকাণ্ডে আমাদের ছেলে-মেয়েরা আতংকে ঘর থেকে বের হতে পারছেনা। স্কুলছাত্রী রাজনা বেগম একজন মেধাবী ছাত্রী ছিল। তার এমন নৃশংস হত্যাকান্ডে যারা জড়িত তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে ফাঁসি দিতে হবে।

নিহত রাজনা বেগমের বাবা ইসরাইল মিয়া বলেন, যারা আমার আদরের মেয়ে রাজনা বেগমকে হত্যা করেছে তাদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। আমি হত্যায় জড়িতদের ফাঁসি চাই। এসময় কান্না করতে করতে বারবার মুর্চা যাচ্ছিলেন তিনি।

এদিকে মানববন্ধন চলাকালে দিরাই মদনপুর-রাস্তা অবরোধ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত চলমান মানববন্ধন ও অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে দিরাই-মদনপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে।

পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার উজ জামান ঘটনাস্থলে পৌছেঁ রাজনা হত্যার রহস্য উদঘাটন করে হত্যায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস প্রদান করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সক্ষম হন।

এব্যাপারে জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ থানার দায়িত্বে থাকা সহকারী পুলিশ সুপার শুভাশীষ ধর বলেন, রাজনা হত্যার বিষয়ে বহুমূখী তৎপরতা রয়েছে, এ ঘটনায় ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে তার কোনো সম্পৃক্ততা না থাকায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য গত শনিবার (২২ জুলাই) সন্ধ্যায় পাথারিয়া গ্রামের শরীফপুর তালুকদার বাড়ী সংলগ্ন সড়কের পাশে নিহত স্কুলছাত্রী রাজনা বেগমের বস্তাবন্দী মরদেহ দেখতে পান এলাকাবাসী। পরে খবর পেয়ে রাজনা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা একাধিক জনকে আসামী করে রবিবার (২৩ জুলাই) শান্তিগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন রাজনা বেগমের পিতা ইসরাইল মিয়া। মামলা দায়েরের পর রোববার স্থানীয় ইউপি সদস্য নিহত রাজনার নিকটাত্মীয় আব্দুর রাজ্জাককে সন্দেহজনকভাবে আটক করে থানা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হত্যাকাণ্ডে আব্দুর রাজ্জাকের সম্পৃক্তা না পেয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এব্যাপারে ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমাকে থানা পুলিশ রাজনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আমার কোনো সম্পৃক্তা না পেয়ে আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আমি এই ঘটনায় জড়িত নই। যে প্রকৃত হত্যাকারী আমিও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই; যোগ করেন তিনি।