দিনে দিনে মাস্টারক্লাস কোচ হয়ে উঠছেন লিওনেল স্কালোনি। তাঁর তীক্ষ্ণ বুদ্ধিতে ভর করে চলছে আর্জেন্টিনার অজেয় যাত্রা। এবার মহামঞ্চে মহাকোচ হওয়ার সুযোগ তাঁর। দারুণ এক দল নিয়ে কাতারে গেছেন দুইবারের চ্যাম্পিয়নরা। একদিকে মেসির শেষ বিশ্বকাপ, আরেকদিকে ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘোচানোর পালা। কেমন পরিকল্পনা সাজাবেন স্কালোনি- প্রশ্নটা এতক্ষণে হয়তো ঘুরপাক খাচ্ছে আকাশি-সাদার সমর্থকদের মাথায়ও।
আক্রমণভাগ
এবার আক্রমণভাগে সলিড তিনজনকেই পাচ্ছেন লিওনেল স্কালোনি। যেখানে মেসিকে দেখা যাবে তাঁর পছন্দের পজিশন রাইট উইংয়ে। আর লেফট উইংয়ে থাকবেন কোপা আমেরিকার ফাইনাল ম্যাচের নায়ক ডি মারিয়া। সেন্টার ফরোয়ার্ডে লাওতারো মার্টিনেজকে রাখতে পারেন স্কালোনি। তাতে মাঝমাঠ পেরিয়ে আক্রমণ ডি-বক্সের আশপাশে এলেই সেটা প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়রা ঘিরে ধরার আগে সামনে বাড়াতে পারবেন মেসি বা ডি মারিয়া। প্রয়োজনে লাওতারো একটু নিচে নেমে খেলতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সেকেন্ড স্ট্রাইকার পজিশনে লাওতারো নামলে মেসিকে সেন্টারে গিয়ে অপেক্ষা করতে হবে। আর ডি মারিয়া যদি আক্রমণ শানান, তাহলে তিনি খুঁজবেন মেসি বা লাওতারোকে। সামনের পথ ব্লক থাকলে তিনি রাইট উইংয়ে থাকা মেসিকে বলটা বাড়িয়ে দেবেন। এর পর মেসিকে নিতে হবে রক্ষণ ভাঙার চ্যালেঞ্জ।
মাঝমাঠ
মাঝমাঠ নিয়েই বেশি চিন্তায় ছিলেন আর্জেন্টিনার কোচ। তাঁর গোনার মধ্যে থাকা লো সেলসো ইনজুরিতে পড়ায় যত গন্ডগোল পাকে। এর পর অনেক ভেবেচিন্তে মাঝমাঠটা ঠিক করেন তিনি। যেখানে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডে পারদেসই পারফেক্ট। তাঁর সঙ্গে রদ্রিগো ডি পল ও অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারকে নিতে হবে বলের পজেশন রেখে আক্রমণভাগকে সহায়তা করা। রক্ষণভাগ থেকে বল বাড়িয়ে মাঝমাঠ পর্যন্ত আনার পর যদি প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের বাধায় পড়েন ডি পল-ম্যাক, সে ক্ষেত্রে মেসি বা ডি মারিয়াকে খানিকটা নিচে নেমে বল রিসিভ করতে হবে। এরপর ডি-বক্সের সামনে ওত পেতে থাকা লাওতারোকে খুঁজতে হবে। লাওতারোর সামনের পথটা খালি থাকলে তিনি চাইবেন দ্রুত ডি-বক্সের দিকে ছুটতে। আর পেছন থেকে মেসি বা মারিয়া যদি ক্রস দিতে পারেন, তাহলেই হয়তো মিলবে সফলতা।
রক্ষণভাগ
আর্জেন্টিনার রক্ষণ নিয়ে আগের কয়েকটা বিশ্বকাপে ছিল অনেক সমালোচনা। এবার অন্তত তেমন কথা বলার সুযোগ নেই। চারজনকে রেখেই প্রতিপক্ষের আক্রমণ থামিয়ে দিতে চাইবেন স্কালোনি। যেখানে রাইটব্যাকে মলিনা, লেফটব্যাকে অ্যাকুনাকে দেখা যেতে পারে। আর সেন্টারব্যাক সামলানোর দায়িত্ব থাকবে রোমেরো ও ওতামেন্ডির কাঁধে। তবে প্রতিপক্ষের কৌশল বুঝে এই পজিশনের কিছুটা নড়চড় করতে পারেন স্কালোনি। কখনও হয় মলিনা ও অ্যাকুনা নিচের দিকে নেমে যাবেন। আর সামনে মাঝমাঠ অবধি বল নিয়ে দৌড়াতে হবে ওতামেন্ডি ও রোমেরোকে। অবশ্য রোমেরো খুব একটা ডিফেন্স লাইন ছেড়ে এগিয়ে খেলতে চান না। যেটা ওতামেন্ডি আবার ভালোভাবে পারেন। আর গোলপোস্টের নিচে তো থাকবেন আকাশি-সাদাদের নাম্বার ওয়ান রক্ষণ মার্টিনেজ।