যুক্তরা‌জ্যে কেয়ার ভিসা : কা‌লো তা‌লিকায় নেই বাংলা‌দেশ

কেয়ার হো‌মে জনবল সংক‌টের কার‌ণে এ বছর যুক্তরাজ্য চালু হয় হেলথ অ্যান্ড কেয়ার ওয়ার্কার ভিসা। বাংলা‌দেশসহ বি‌ভিন্ন দেশ থে‌কে হাজার হাজ‌ার চাকুরিপ্রা‌র্থী যুক্তরা‌জ্যে আসেন এই ভিসায়।

কিন্তু বছর শে‌ষে ক‌য়েক‌টি দে‌শের জন্য দুঃসংবাদ দি‌য়ে‌ছে দেশ‌টির মাই‌গ্রেশন অ্যাডভাইজরি ক‌মি‌টি। নানা অ‌নিয়‌মের অভিযো‌গে ক‌মি‌টি ৫টি দেশ‌কে কালো তালিকাভুক্ত ক‌রে‌ছে। ত‌বে এই তা‌লিকায় নাম নেই বাংলা‌দে‌শের।

সং‌শ্লিষ্ট সূ‌ত্রে জানা যায়, যুক্তরা‌জ্যের কেয়া‌র ‌হোমগু‌লোর তীব্র ওয়ার্কার সংক‌টে হেলথ অ্যান্ড কেয়ার ভিসা চালু ক‌রে সরকার। ডি‌পে‌ডেন্ট সু‌বিধাসহ এই সেক্ট‌রে ভিসা চালু করা হয়।

যুক্তরা‌জ্যে অবস্থানরত শিক্ষার্থীসহ বাংলা‌দেশ থে‌কে হাজা‌রেরও বে‌শি চাক‌রিপ্রা‌র্থী কেয়ার ওয়ার্কার ভিসায় নি‌জে‌দের সুইচ ক‌রেন। বি‌শেষ ক‌রে যারা স্টু‌ডেন্ট ভিসায় ব্রিটেনে এসেছি‌লেন, তা‌দের এক‌টি অংশ ছাত্রত্ব ভিসা বা‌তিল ক‌রে কেয়ার ভিসায় চ‌লে যান। ‌ত‌বে এই ভিসায় ভারতীয়দের আধিক্য বে‌শি।

আলোচিত এই ভিসা নি‌য়েও নানা সমা‌লোচনা ছিল। সামর্থ না থাকা স‌ত্ত্বেও অনেকে কেয়ার হোম ভিসা বের ক‌রেন। তা‌দের বিরু‌দ্ধে ওয়ার্কারদের কাজ না দেয়ারও অভি‌যোগ আছে। এছাড়া অধিক মূ‌ল্যে ভিসা বি‌ক্রিরও অভিযোগ ওঠে কেয়ার হোম মা‌লিক ও এজেন্ট‌দের বিরু‌দ্ধে।

বিষয়‌টি আম‌লে নি‌য়ে যুক্তরা‌জ্যের মাই‌গ্রেশন অ্যাডভাইজরি ক‌মি‌টি তদন্ত ক‌রে দফায় দফায়। নানা অসঙ্গ‌তির সত্যতা পায় অ্যাডভাইজা‌রি ক‌মি‌টি।
ডি‌সেম্বর মা‌সের ১৩ তা‌রিখে হোম অফিসের কা‌ছে তারা ৫টি দেশ‌কে হেলথ অ্যান্ড কেয়ার ওয়ার্কার ভিসার জন্য কা‌লো তা‌লিকাভুক্ত করার সুপা‌রিশ ক‌রে। দেশ পাঁচটি হলো ভারত, ইন্দোনে‌শিয়া, ঘানা, জিম্বাবু‌য়ে ও ফি‌লিপাইন।

লন্ড‌নের স‌লি‌সিটর মাহবুবুর রহমান ব‌লেন, ‌কেয়ার ভিসায় মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজরি ক‌মি‌টি পাঁচটি দেশ‌কে কা‌লো তা‌লিকাভু‌ক্তির জন্য সুপারিশ ক‌রে‌ছে। আগামী জানুয়া‌রি‌তে হো‌ম অফিসের যে নতুন প‌লি‌সি আস‌বে সেখা‌নে তা‌দের কা‌লো তা‌লিকাভুক্ত করা হ‌তে পা‌রে। তা‌দের কা‌লো তা‌লিকাভু‌ক্তের কারণ, যখন এসব দেশ থে‌কে ওয়ার্কার আনা হ‌য়ে‌ছে, সে সময় অনৈতিকভাবে অর্থ লেন‌দেন করা হ‌য়ে‌ছে। বিষয়‌টি মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজরি ক‌মি‌টির অনুসন্ধা‌নে ধরা প‌ড়ে‌ছে। যা‌দের অপেক্ষাকৃত অনৈতিক লেন‌দেন‌ বে‌শি হ‌য়ে‌ছে তা‌দের নাম এসেছে তা‌লিকায়। য‌দি এরকম অভিযোগ থা‌কে ত‌াহ‌লে বড় রিস্ক। ভ‌বিষ্য‌তে বাংলা‌দে‌শের নামও আস‌তে পা‌রে। এজন্য সবার স‌চেতন হওয়ায় প্র‌য়োজন। সবকিছু দে‌খে, কা‌লো টাকার লেন‌দেন না ক‌রে এখা‌নে আস‌তে হ‌বে। যারা বাংলা‌দেশ থে‌কে আস‌তে চায় তা‌দের ট্রে‌নিং নি‌তে হ‌বে। য‌দি সু‌যোগ থা‌কে প্র‌শিক্ষণ কে‌ন্দ্রে বা হাসপাতা‌লে গি‌য়ে অভিজ্ঞতা নি‌তে পা‌রে। তাহ‌লে ভ‌বিষ্য‌তে অনেক কা‌জে আস‌বে। এক্ষেত্রে সরাস‌রি কেয়ার হোম বা এজেন্টের মাধ্য‌মে এলে অনৈতিক লেন‌দেন থাক‌তে পার‌বে না। এবং ইং‌রে‌জি বিষ‌য়ে দক্ষতা থাক‌তে হ‌বে। এই সেক্ট‌রে এখ‌নও ৭০ হাজা‌রের মতো পদ খা‌লি আছে। যোগ্যরা এলে ভা‌লো সু‌বিধা পা‌বেন।

নাম প্রকা‌শে অনিচ্ছুক লন্ড‌নে কর্মরত কেয়ার হো‌মের বাংলা‌দেশি এক ওয়ার্কার ব‌লেন, আমি স্টু‌ডেন্ট হি‌সে‌বে এসে কেয়ার ভিসায় সুইচ ক‌রে‌ছি। রেস্টু‌রেন্টের ওয়ার্ক পার‌মি‌টের চে‌য়ে ক‌য়েক হাজার পাউন্ড বে‌শি খরচ হ‌য়ে‌ছে। এই সেক্ট‌রে বে‌শি এসেছে ভারতীয়, আফ্রিকান ও ক্যারি‌বিয়ান লোকজন। হয়‌তো নানা অসঙ্গ‌তির কারণে তাদের কা‌লো তা‌লিকাভুক্ত করা হ‌য়ে‌ছে।