মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়

মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশ সীমান্তে আঘাত হানতে পারে একটি ঘূর্ণিঝড়। এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইডি গবেষক এবং আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ।

তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে ভিন্ন কথা। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, যেহেতু ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টিই হয়নি, তাই আঘাত হানার শঙ্কাও এখনই তৈরি হয়নি। অধিদপ্তরের পরিচালক বলছেন, মঙ্গলবার (২ মে) এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, বঙ্গোপসাগরে ৯ থেকে ১১ মে এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘মোচা’ সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ঝড়টি সৃষ্টি হলে বাংলাদেশ সীমান্তে আঘাত হানতে পারে ১৩ থেকে ১৬ মে এর মধ্যে।

আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাসের তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, ৮ থেকে ৯ মের মধ্যে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। লঘুচাপটি ১০ মের মধ্যে গভীর নিম্নচাপে ও ১১ মে এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।

আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল গ্লোবাল ফোরকাস্টের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ঘূর্ণিঝড়টি ১৪ মে মধ্যরাত থেকে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে সরাসরি স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে স্থলভাগে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় বাতাসের সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ১৪০ থেকে ১৭০ কিলোমিটার।

আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ফলে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কাও রয়েছে। ১৪ মে (চাঁদের ৮১ শতাংশ অন্ধকার থাকবে) সন্ধ্যার পর যদি ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগে আঘাত হানে তাহলে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের চর এবং উপকূলীয় এলাকায় কমপক্ষে ১০ ফুট পর্যন্ত উঁচু জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়টি যদি ১৭ বা ১৮ মে আঘাত হানে তাহলে এসব এলাকায় ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা থাকবে।

তাই উপকূলে সরকারিভাবে দ্রুত বার্তা পৌঁছানো, আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা, দ্রুত ধান কাটাসহ নানা প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মোস্তফা কামাল পলাশ।

তবে ঘূর্ণিঝড় ‘মোচা’র বাংলাদেশে আঘাত হানার ব্যাপারে কোনো পূর্বাভাস জানায়নি আবহাওয়া অধিদপ্তর।

অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় (মোচা) সৃষ্টিই হয়নি। বাংলাদেশে আঘাত হানা না হানার প্রশ্ন আসবে কোথা থেকে?

অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. শামীম আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, আন্তর্জাতিক সবগুলো আবহাওয়া মডেল ৯ থেকে ১০ মে এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছে। সবকিছুই ঠিক আছে, কিন্তু আবহাওয়া অধিদপ্তর একটি দায়িত্বশীল সরকারি প্রতিষ্ঠান। একেবারে নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে এখনই আমরা কিছু বলতে পারছি না। মানুষকে বার্তা দিতে হলে একেবারে নিশ্চিত হয়ে দিতে হবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার আমরা বৈঠক করব। সবগুলো মডেল নিয়ে আমরা আলোচনা করব। তারপর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।