দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক বলেছেন, “ভাষা নিয়ে আমাদের সংগ্রাম সারা বিশ্বে অনন্য এক নজির স্থাপন করেছে। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনে প্রতিষ্ঠা করতে যাঁরা আত্মত্যাগ করেছেন তাঁরা বাঙালি জাতির সূর্যসন্তান। তাঁরা ছিলেন বলেই আজ আমরা গর্ব করে মায়ের ভাষায় কথা বলছি, যোগাযোগ করছি।
তিনি বলেন, ‘মূলতঃ একুশের চেতনা ধারণ করেই সংস্কৃতিভিত্তিক জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি স্বাধীনতা। ফ্রেব্রুয়ারি মাস আসলেই দাবী তোলা হয় সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালুর। প্রকৃত দরদ ও ভালোবাসা দিয়ে নিজের মাতৃভাষা তথা বাংলা ভাষার চর্চা করলে তা সম্ভব। এজন্য অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানে বৈশ্বিক অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।’
২১ ফেব্রুয়ারি সকালে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন উপলক্ষ্যে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
প্রফেসর এম. হাবিবুর রহমান হলে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, উপ-উপাচার্য প্রফেসর শিব প্রসাদ সেন।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সুরেশ রঞ্জন বসাকের সভাপতিত্বে ও রেজিস্ট্রার তারেক ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, মহান শহিদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব আইন ও বিচার বিভাগের প্রধান গাজী সাইফুল হাসান।
দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরতে বর্তমান প্রাসঙ্গিকতায় “তথ্য-প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার অবস্থানঃ সম্ভাবনা ও করণীয়” শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কাজী অহিদুজ্জামান।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ব্যবসা ও অর্থনীতি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. তাহের বিল্লাল খলিফা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. নজরুল হক চৌধুরী, আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন শেখ আশরাফুর রহমান ও উপ-রেজিস্ট্রার মিহিরকান্তি চৌধুরী প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর শিব প্রসাদ সেন বলেন, ‘আমরা অনেক লড়াই-সংগ্রাম করে মাতৃভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি ।এই সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় স্বাধীন হয়েছি। তারপরেও আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। বাংলাভাষাকে সর্বস্তরে চালু করতে হবে।’
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. সুরেশ রঞ্জন বসাক বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন নিরন্তর চলছে। ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রভাষা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনের প্রথম পর্ব। পরের পর্বে চলছে বাংলাভাষাকে সর্বস্তরে চালু করার সংগ্রাম, শুদ্ধভাবে ভাষা চর্চার উদ্যোগ। আশা করি আমরা সফলকাম হব।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পরিচালক ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা ও নির্দেশনা অধ্যাপক চৌধুরী এম. মোকাম্মেল ওয়াহিদ, অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান মো. মাহফুজুল হাসান, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান মো. মাসুদ রানা, ইংরেজী বিভাগের প্রধান অনিক বিশ্বাস, সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান চৌধুরী নওশাদ আহমদ, আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক (ইএলটি) ড. রমা ইসলাম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক খন্দকার মকসুদ আহমেদ, পরিচালক (অর্থ) মো. ইনামুল হক, উপ-রেজিস্ট্রার (জনসংযোগ) লোকমান আহমদ চৌধুরী, উপ-গ্রন্থাগারিক মাশরুফ আহমেদ চৌধুরীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহিরুল হকের নেতৃত্বে সকাল নয়টায় সিলেট শহরের চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহিদমিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। পরে বটেশ্বর স্থায়ী ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা পতাকা ও ইউনিভার্সিটির পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিত করেন যথাক্রমে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক ও উপ-উপাচার্য প্রফেসর শিব প্রসাদ সেন। এসময় ক্যাম্পাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতিতে ভাষা সৈনিকদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটিতে অয়োজিত দিবসভিত্তিক কবিতা আবৃত্তি এবং উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধান অতিথি। দ্বিতীয় পর্বে দিবসভিত্তিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরো আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে।