হবিগঞ্জের মাধবপুরে চোরাই গাছ উদ্ধারের ৬ দিন পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। কি কারণে মামলা হচ্ছে না, কাকে বাঁচাতে দিন ক্ষেপণ করা হচ্ছে তা নিয়ে সচেতন মহলে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
জানা যায়, গত ২৯ মার্চ মাধবপুর উপজেলার বৈকন্ঠপুর চা বাগানের ভিতর থেকে বাগানের ব্যবস্থাপক সামসুল হক ভুইয়ার সহযোগীতায় নোয়াপাড়া চা বাগানের এক ব্যক্তি গাছ কেটে নিয়ে যাবার সময় বাগানের প্রহরীরা গাড়িসহ গাছগুলো আটক করে। পরে বাগানের শ্রমিকরা নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. সোহেলকে অবগত করলে চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. সোহেল ও রঘুনন্দন রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা খলিলুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়ি ও গাছ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে সেগুলো জগদীশপুর বিট অফিসে জমা রাখা হয়।
কিন্তু গাছ উদ্ধারের ৬ দিন পাড় হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় মামলা হয়নি। তবে কি ঘটনার সাথে জড়িতদের রেহাই দিতেই মামলা করা হচ্ছে না; এমন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে সচেতন মহলে।
বৈকন্ঠপুর চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক খোকন চৌহান জানান, গাছগুলো আটক করার পর গাড়ির চাবিটা গুদাম বাবু শাহজাহান সাবের নিকট জমা রেখে তারা চলে যান। পরে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবগত করা হলে তিনি এসে গাড়িসহ গাছগুলো শাহপুর রেঞ্জ অফিসের লোকদের কাছে বুঝিয়ে দেন।
বৈকন্ঠপুর চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি গেনু কেউট জানান, গত শনিবার চা বাগানের পিছনের অংশ থেকে গাছ কাটা হয়। নোয়াপাড়া চা বাগনের লাড্ডু নামের একজন ২টি গাছ কাটে। গাছগুলো আটক করার পর ম্যানেজার সামসুল হক ভুইয়া ঘটনাস্থলে আসেন। এসে বাগান শ্রমিকদের বলেন- নোয়াপাড়ার লাড্ডুকে তিনি গাছগুলো দিয়েছেন। বাগান কোম্পানী বিষয়টি জানে, কোম্পানীর অনুমতি নিয়ে গাছগুলো তাকে দেওয়া হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) বাবুল চৌহান জানান, তারা ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসা করেছিল গাছগুলো কিভাবে কাটিয়েছে। ম্যানেজার তাদের বলেছেন কোম্পানীর আদেশ আছে। কোম্পানীর আদেশে গাছগুলো তিনি দিয়ে দিয়েছেন। আটককৃত গাছগুলো নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ফরেস্টের লোকজনকে দিয়ে দেওয়া হয়। পরে কি হয়েছে তিনি জানেন না।
এ ব্যাপারে নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. সোহেল জানান, ‘গাছগুলো সম্পূর্ন অবৈধ প্রক্রিয়ায় কাটা হয়। উদ্ধারকৃত গাছগুলো শাহপুর রেঞ্জ অফিসারের নিকট বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এই বিষয়ে মামলা হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এখনও মামলা হওয়ার খবর পাইনি।’
শাহপুর রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা খলিলুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মামলা হয়েছে। তবে কবে মামলা হয়েছে বা কোন ধারাতে মামলা হয়েছে সেটা তিনি বলতে রাজি হননি।
হবিগঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক কর্মকর্তা তারেকুজ্জামানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মামলার প্রক্রিয়া চলমান আছে।