বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় ধীরে ধীরে আমূল পরিবর্তন আসছে। আধুনিকায়ন করা হয়েছে এই ব্যবস্থাপনাকে। এই পরিবর্তনের অন্যতম কারিগর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মচারীগণ রাত-দিন পরিশ্রম করে ডিজিটাল ব্যবস্থায় ভূমি উন্নয়ন কর পাইলটিং করা, ই—নামজারিসহ সকল কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছেন। কিন্তু এই মাঠের কারিগররা নানাভাবে তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা অনতিবিলম্বে নবম পে কমিশন গঠন করে বেতন বৈষম্য নিরসনসহ ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) ভূমি মাঠ প্রশাসন সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতি সিলেট এর ২য় বার্ষিক সম্মেলন ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এই দাবি উত্থাপন করেন।
সিলেট নগরীর দরগাহ গেটস্থ কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহীদ সোলেমান হলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ভূমি প্রশাসন (রাজস্ব) সরকারি কর্মচারী (১৬—১৭ গ্রেড) সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব মো. আজিজুল হক। প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মামুন মিয়া।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. জামাল হোসেন, বাংলাদেশ ১৬—২০ গ্রেড সরকারি কর্মচারী সমিতির সিলেট বিভাগীয় সভাপতি অখিল চন্দ্র চন্দ, সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস আলী, বার্ষিক সম্মেলন ও সংবর্ধনা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মো. বদরুল ইসলাম ও সদস্য সচিব মো. নুরুল ইসলাম।
স্বাগত বক্তব্য দেন ভূমি মাঠ প্রশাসন সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতি সিলেট এর সাধারণ সম্পাদক মু. আব্দুস সালাম। অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুকতার হোসেন ও মোবারক হোসেন।
ভূমি মাঠ প্রশাসন সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতি সিলেট এর দপ্তর সম্পাদক মো. ফারুকুজ্জামান আরিফ ও সিলেট সদরের সভাপতি জয়নাল আহমদের যৌথ সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন, সংগঠনের সিলেট দক্ষিণ সুরমা শাখার পক্ষে আতাউর রহমান, ফেঞ্চুগঞ্জের বাবুল আকতার, বালাগঞ্জের দীপক চন্দ্র দেব, ওসমানীনগরের সেবল রায়, বিশ্বনাথের মো. ফয়জুল ইসলাম, গোলাপগঞ্জের আবুল হাসনাত, কানাইঘাটের হানিফুর রহমান, জৈন্তাপুরের অনিল চন্দ্র মালাকার, গোয়াইনঘাটের স্বপন বিশ্বাস, কোম্পানীগঞ্জের আয়াত উদ্দিন, জকিগঞ্জের সুজিত বিশ্বাস, কালেক্টরেট মুহিবুর রহমান, জেলা কমিটির ইমাম হোসাইন, জবা রানী নাথ, ফাতেহা বেগম, মো. খুরশেদ আলম, আশফাক আহমদ, সোহেল আহমদ, প্রদীপ দত্ত, জোবায়ের আহমদ, আলী আহমদ, আলীম উদ্দিন, মো. মুহিবুল ইসলাম জাকারিয়া, মৌলভীবাজারের পক্ষে রাজস্ব প্রশাসন শাখার সাধারণ সম্পাদক রাসেল আহমদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ২০২০—২১ ও ২২ সালে অবসর গ্রহণ করা ১৯ জন কর্মচারীকে সম্মাননা ও পুরস্কার প্রদান করা হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ সাফওয়ান আহমদ। গীতা পাঠ করেন সেবল রায়।
সভায় ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের জোর দাবি জানানো হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- দ্রুত নবম পে—কমিশন গঠন এবং নবম পে—স্কেলের মাধ্যমে বেতন বৈষম্য নিরসন করতে হবে। জীবন যাত্রার মান ও আয়—ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে ৩টি থেকে ৮টি বিশেষ ইনক্রিমেন্ট অথবা ৪০% মহার্ঘ (সর্বনিম্ন ৫০০০ টাকা) দিতে হবে। সচিবালয়ের ন্যায় পদ ও গ্রেড পরিবর্তন করতে হবে। বর্তমান ২০ গ্রেডের পরিবর্তে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের প্রণয়নকৃত ১৯৭৩ সালের আলোকে বেতন বৈষম্য দূরকল্পে ১০টি গ্রেড বাস্তবায়ন করতে হবে। ১৬ হতে ২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়া মূল বেতনের শতভাগ ও স্বল্প মূল্যে রেশন দিতে হবে। ১৬ হতে ২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারীদের বিনাসুদে ৫০ লক্ষ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ দিতে হবে। ব্লক পদে পদোন্নতির সুযোগসহ সকল দপ্তরে কমন নিয়োগবিধি বাস্তবায়ন করা, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল ভাতা, ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ঝুঁকি ভাতা এবং ওভার টাইম চালু করতে হবে। চিকিৎসা ভাতা ৩০০০, শিক্ষা ভাতা ৩০০০, টিফিন ২৫০০ ও বাস্তবসম্মতভাবে যাতায়াত ভাতা পুনঃনির্ধারণসহ আউটসোর্সিং নিয়োগ প্রথা বাতিল করতে হবে।