এশিয়া ফাউন্ডেশনের জরিপ

ভুল পথে অর্থনীতি, মনে করেন ৭০ শতাংশ মানুষ

দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ মনে করেন অর্থনীতি ভুল দিকে চলছে। আর ৪৮ শতাংশ মানুষ মনে করে রাজনীতি ভুল পথে চলছে।

তবে রাজনীতি সঠিক পথে চলছে বলে মনে করেন ৩৯ শতাংশ মানুষ। ২৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন দেশের অর্থনীতি সঠিক পথে চলছে।

দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি), ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে। দ্য স্টেট অফ বাংলাদেশ’স পলিটিক্যাল, গভর্ন্যান্স, ডেভেলেপমেন্ট সোসাইটি সম্প্রতি এ সমীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেছে।

২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এ সমীক্ষা চলে। এতে ৬৪টি জেলার মোট ১০ হাজার ২৪০ জন নারী পুরুষ অংশ নেন। ২০১৭, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালেও একই বিষয়ে সমীক্ষাটি করা হয়েছিল।

এশিয়া ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে সঠিক পথে চলেছে কিনা- সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের কাছে তা জানতে চাওয়া হয়।

সমীক্ষায় জানা যায়, ২০১৯ সালের তুলনায় এবারের সমীক্ষার তিনটি দিকেই মানুষের ইতিবাচক ধারণা অপেক্ষাকৃত কম যা সামগ্রিকভাবে দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে মানুষের নেতিবাচক মূল্যায়নের বহিঃপ্রকাশ।

অর্থনৈতিক অবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে দেশের নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর ইতিবাচকতা উচ্চ আয়-গোষ্ঠীর তুলনায় অনেক বেশি কমেছে। ৫,০০০ টাকা বা তার চেয়ে কম আয় করে এমন ৮৪ শতাংশ মানুষ ২০১৯ সালে জানিয়েছিলেন, তাদের মতে দেশের অর্থনীতি সঠিকপথে আছে। ২০২২ সালে শতাংশ ৩২ ভাগ মানুষের কাছ থেকে এ উত্তর পাওয়া গেছে। অর্থাৎ ৫২ শতাংশ মানুষ আগের ইতিবাচক অবস্থান থেকে সরে এসেছেন।

তুলনায় দেখা যায়, ৪০,০০০-৫০,০০০ হাজার টাকা মাসিক আয় যাদের, তাদের মাঝে এ পরিবর্তনের হার ৩০ শতাংশ, অর্থাৎ ২০১৯ সালে ৫৮ শতাংশ মানুষ ইতিবাচক ধারণা পোষণ করতেন আর ২০২২ সালে এ ইতিবাচক ধারণা করে ২৭ শতাংশ।

জরিপের ৪৪ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, তাদের মতে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। এ সম্পর্কে মোট ৮৪ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, এ সমস্যা তাদের জীবন ও জীবিকার ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে। ব্যবসায়িক মন্দা, বেকারত্ব, দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ইত্যাদি সমস্যার কথাও জরিপে উঠে এসেছে।

অন্যদিকে ২০২২ সালের জরিপে উত্তরদাতাদের প্রায় ৫৪ শতাংশ জানিয়েছেন, বাংলাদেশে এমন একটি পরিবেশ বিদ্যমান যেখানে একদল রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থায় শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। ২০১৯ সালে এ একই মত পোষণ করেছিলেন ৭২ শতাংশ জনগণ। লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হলো- ২০১৯ সালে ১১ শতাংশ মানুষ ভাবতেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব রাজনীতিতে নেতিবাচক। ২০২২ সালে এসে এমনটি ভাবছেন ৩৪ শতাংশ মানুষ।

সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রায় ৭২ শতাংশ বলেছেন, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। সেতু নির্মাণের কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়েছে জরিপে অংশ নেয়া প্রায় অর্ধেক মানুষ (৪৭ শতাংশ)। অন্যদিকে ২৮ শতাংশ মানুষ কৃতিত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারকে।

জরিপে আরও বলছে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি মানুষের সহানুভূতি কমে যাচ্ছে। নিজেদের মাঝে শরণার্থীদের স্বাগত জানাবে- জনমনে এমন মনোভাব ক্রমান্বয়ে কমেছে। ২০১৮ সালে ৩৪শতাংশ, সেখান থেকে ২০১৯ সালে ১৫ শতাংশ ও ২০২২ সালে ১৩ শতাংশ মানুষ শরণার্থীদের সম্পর্কে ইতিবাচক মতামত দিয়েছে।

 

তথ্যসূত্র : যুগান্তর