বিয়ানীবাজারে মুক্তিযোদ্ধার কবরের উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ

সিলেটের বিয়ানীবাজারে বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরের উপর দিয়ে ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের বারইগ্রামে সরকারি কবরস্থানে শায়িত একই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আজির উদ্দিনের কবরের স্থান সনাক্ত করেন তার সন্তান রুম্মান আহমদ শান্ত (২২)।

তিনি জানান, কবরস্থানের পাশ্ববর্তী ভূমির মালিক জোরপূর্বক এলাকার সবার বাধাকে উপেক্ষা করে আমার বাবার কবরসহ অনেকের কবর উপর দিয়ে জোরপূর্ব ড্রেন ও রাস্তা নির্মানের চেষ্টা করছেন

এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি অভিযোগ করা হয়েছে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বারইগ্রামের বাসিন্দা সাবেক সেনা সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আজির উদ্দিন ২০০৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। গত ১৫ এপ্রিল কবরস্থান সংলগ্ন ভূমির মালিক ফারুক আহমদ ও তার পুত্র ফয়সল আহমদ, সরকারি জায়গা উল্লেখ করে জোরপূর্বক তার কবরের উপর দিয়ে ড্রেন নির্মান করেন। পরে স্থানীয় কবরস্থানের দায়িত্বশীলদের নিয়ে বাঁধা দিলেও তারা মানেননি।

বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রুম্মান আহমদ শান্ত জানান, তার বাবাসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অরক্ষিত কবরকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে কবরস্থানকে চিহ্নিত করা হোক।

বিয়ানীবাজার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড নেতা এনামুল হাসান রায়হান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে কবরের উপরে ড্রেন নির্মাণের সত্যতা পাওয়ায় আমরা এ বিষয়ে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই।

লাউতা ইউনিয়ন বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সভাপতি সাব্বির আহমদ জানান, আমার বাড়ি একই এলাকায়, আমি খবর পেয়ে এসে দেখে মর্মাহত হই। আমরা প্রশাসনকে অবহিত করেছি। আশা করি তার একটি ব্যবস্থা নিবেন।

এদিকে, এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত ফারুক আহমদের বাড়িতে গেলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। পরে তার স্ত্রী জানান, এই জায়গা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বাড়ির পানি গিয়েছে, আমরা শুধুমাত্র সুন্দর করে দেয়ার জন্য ড্রেন করেছিলাম। রাস্তা করার কথা তিনি অস্বীকার করলেও ঘরের ভিতরে কবরস্থানের জায়গা রয়েছে বলে স্বীকার করেন তিনি।

খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জামাল হোসেন কবরস্থান পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন। তিনি কবরস্থানের উপর দিয়ে ড্রেন ও রাস্তা তৈরির অপচেষ্টার নিন্দা জানান এবং সমস্যা নিরসনে সকল পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধানের আশ্বাস দেন।

বিয়ানীবাজার উপজেলা সহকারি কমিশনাদ (ভূমি) তানিয়া আক্তার জানান, ডিসি খতিয়ানের জায়গায় কেউ ব্যাক্তিগত কাজে ড্রেন বা রাস্তা করলে সেটা বেআইনী। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে, বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে আমরা কবরস্থানের ব্যাপারে সিন্ধান্ত নিবো।

বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব বলেন, কবরস্থানের উপর দিয়ে ড্রেনের বিষয়টি জেনেছি। আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বলেছি বিষয়টি সবাইকে নিয়ে সুরাহা করতে।

সিলেট ভয়েস/এএইচএম