বায়ুমণ্ডলে শক্তিশালী গ্রিনহাউস গ্যাস মিথেনের ঘনত্ব দ্রুত গতিতে বাড়ছে বলে জানিয়েছেন জলবায়ু গবেষকরা। ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় মিথেন গ্যাস কমানো নিয়ে যেসব দেশ কাজ করছে তারা হুমকির মুখে পড়ছে বলে গবেষকরা সতর্ক করেছেন।
এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ লেটারে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে গ্লোবাল কার্বন প্রজেক্টের আওতায় গবেষকদের একটি আন্তর্জাতিক গ্রুপ বলেছে, গ্রিনহাউসের অন্য প্রধান গ্যাসের তুলনায় মিথেন তুলনামূলকভাবে প্রাক শিল্প সময়ের চেয়ে বর্তমানে ২ দশমিক ৬ গুণ হারে বাড়ছে।
গ্রিনহাউসের দ্বিতীয় শক্তিশালী গ্যাস মিথেন মানবসৃষ্ট কর্মকাণ্ড থেকে তৈরি হয়। বায়ুমন্ডলে ২০০০ সালের দিকে প্রতিবছর গড়ে ৬১ লক্ষ টন মিথেন গ্যাস যুক্ত হতো। তা ২০১০ সালের দিকে বেড়ে হয়েছে ২০ দশমিক ৯ মিলিয়ন টন। বায়ুমন্ডলে ২০২০ সালে মিথেন গ্যাস যুক্ত হওয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪১ দশমিক ৮ মিলিয়ন টন।
গবেষকরা বলছেন, কয়লা উত্তোলন, তেল ও গ্যাস উৎপাদনের কারণে চীন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি মিথেন গ্যাস তৈরি হচ্ছে। এছাড়া প্রাকৃতিকভাবে লা লিনার প্রভাবেও মিথেন গ্যাসের পরিমাণ বাড়ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ২০৩০ সালের মধ্যে ২০২০ সালের স্তর থেকে মিথেনের পরিমাণ ৩০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যে ২০২১ সালে ‘গ্লোবাল মিথেন প্ল্যাজ’ নামক একটি প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়।
এতে চীন, ভারত ও রাশিয়া ছাড়া বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশ স্বাক্ষর করে। গবেষণাপত্রের মূল লেখক স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী রব জ্যাকসন বলেছেন, এ মুহূর্তে ‘গ্লোবাল মিথেন প্ল্যাজ’ এর লক্ষ্যকে মরুভূমিতে দূরের মরুদ্যান বলে মনে হচ্ছে।
তিনি বলেন, তবে আমরা সকলে আশা করি তা মরীচিকা নয়। কারণ, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র এই বছরের শেষের দিকে কার্বন ডাই অক্সাইড ছাড়া গ্রিনহাউস গ্যাস বিষয়ে একটি শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা সরকারগুলোর আরও প্রতিশ্রুতির সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিয়েছে।