বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে হামলা চালিয়ে টাকা ও ১৪টি অস্ত্র লুট করেছে নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)।
গতকাল মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিনকে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে তাকেও অপহরণ করা হয়েছে।
সোনালী ব্যাংক বান্দরবান অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মোহাম্মদ ওসমান গণি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রুমা শাখায় এক কোটি ৬০ লাখ টাকা থাকার কথা। সেগুলো ভল্ট ভেঙে নিয়ে গেছে। এই ঘটনার পর এ অঞ্চলের ব্যাংকের সব শাখায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।‘
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৯টার দিকে কেএনএফের ৭০ থেকে ৮০ জন সশস্ত্র সদস্য রুমা উপজেলা পরিষদ এলাকা ঘেরাও করে। তারা সোনালী ব্যাংকে গিয়ে পাহারারত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেয় এবং মারধর করতে থাকে। ব্যাংকে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
রুমার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিদারুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, কেএনএফের সন্ত্রাসীরা ব্যাংক ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিনকে সন্ত্রাসীরা নিয়ে গেছে কিনা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনার পর উপজেলা পরিষদ এলাকায় কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
রুমা উপজেলা পরিষদ উপজেলা শহর থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তরে বেথেলপাড়ার কাছাকাছি। বেথেলপাড়ায় গত ৫ মার্চ কেএনএফের সঙ্গে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা’ কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে কেএনএফ আর সন্ত্রাসী তৎপরতা না চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
তবে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, ওই বৈঠকের পরও রুমা উপজেলা সদরসংলগ্ন বম জনগোষ্ঠীর বেথেলপাড়া, মুনলাইপাড়া, এডেনপাড়াসহ বিভিন্ন পাড়ায় কেএনএফের সদস্যরা আশ্রয় নিয়ে ছিল।
বান্দরবানে নতুন সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে তৎপরতা শুরু করে। পাহাড়ে তাদের আস্তানায় সমতলের নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়ার সদস্যরা সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়েছিল বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতিপূর্বে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল।
সেই আস্তানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গত বছর অভিযান চালিয়ে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়া ও কেএনএফের বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমার নেতৃত্বে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা’কমিটি গঠন করা হয় গত বছরের মে মাসে। ওই কমিটির সঙ্গে ৫ মার্চ দ্বিতীয় দফা বৈঠক হয় বেথেলপাড়ায়।