বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক জাগরণের অন্যতম প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার এর সিলেট বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১১ আগস্ট) সকাল ১১টায় সিলেটের ঐতিহ্যবাহি শারদা স্মৃতি ভবন প্রাঙ্গণে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে এমএজি ওসমানী অঞ্চল সিলেট, হাসনরাজা অঞ্চল সুনামগঞ্জ, সৈয়দ মুজতবা আলী অঞ্চল মৌলভীবাজার, হেমাঙ্গ বিশ্বাস অঞ্চল হবিগঞ্জ এর সাংগঠনিক দলসমূহের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বিভাগীয় সম্মেলন উদ্বোধন করেন দেশের প্রখ্যাত লোকসংগীত শিল্পী, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী সুষমা দাস। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী রজত কান্তি গুপ্ত।
গীতবিতান বাংলাদেশ এর শিল্পীদের পরিবেশনায় জাতীয় সংগীতের সাথে জাতীয় পতাকা ও সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন উদ্বোধক সহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই পনেরো আগস্ট নির্মমভাবে নিহত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গ, মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদ এবং গ্রাম থিয়েটার এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নাট্যাচার্য সেলিম আল দিন সহ বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জাগরণের প্রয়াত সকলের আত্মার শান্তি কামনা করে দাঁড়িয়ে একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এরপর বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত অধ্যাপক শামীমা চৌধুরীর গ্রন্হনায় আলেখ্য অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে থিয়েটার মুরারীচাঁদ, এমসি কলেজ সিলেট, কবিতা আবৃত্তি করে হবিগঞ্জ প্রতিক থিয়েটারের নাট্যশিল্পী পপি বাউড়ি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের প্রধান পরিচালক অরিন্দম দত্ত চন্দন, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠক আল আজাদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেট এর সভাপতি গীতিকবি শামসুল আলম সেলিম, আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোকাদ্দেস বাবুল, আবৃত্তি শিল্পী সংসদের সদস্য সচীব সুকান্ত গুপ্ত, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার হেমাঙ্গ বিশ্বাস অঞ্চল হবিগঞ্জ এর সমন্বয়কারী ডা. সুনীল বিশ্বাস, সৈয়দ মুজতবা আলী অঞ্চলে মৌলভীবাজার এর সমন্বয়কারী গোবিন্দ রায় সুমন প্রমুখ।
বিভাগীয় সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার বিগত চল্লিশ বছর যাবৎ দেশের সংস্কৃতির বিকাশে ও বাঙালির চিরায়ত লোকসংস্কৃতির প্রসারে দেশব্যাপী শক্তিশালী সাংস্কৃতিক জাগরণের জন্য কাজ করছে। দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিকে ব্যাহত করতে ও অপরাজনীতি চালিয়ে যেতে যত চেষ্টাই করা হোক না কেনো সাংস্কৃতিক জাগরণের মধ্য দিয়ে সকল অপশক্তিকে মোকাবিলা করা হবে।
বক্তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মানে গ্রাম থিয়েটার আন্দোলনকে আরও জোরদারের আহ্বান জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী রজত কান্তি গুপ্ত’র সভাপতিত্বে সাংগঠনিক অধিবেশন সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট এর মহড়াকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। অধিবেশনে চার জেলার সদস্য সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সাংগঠনিক বিভিন্ন রূপরেখা তুলে ধরেন, হেমাঙ্গ বিশ্বাস অঞ্চলের সমন্বয়কারী ডা. সুনীল বিশ্বাস ও সৈয়দ মুজতবা আলী অঞ্চলের সমন্বয়কারী গোবিন্দ রায় সুমন। অধিবেশনে সিলেট নতুন আরো আটটি সংগঠন যুক্ত হবে বলে প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং আগামীতে সংগঠনকে আরোও শক্তিশালী ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে নানান কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।