বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক এখনও ভোগাচ্ছে আজমিরীগঞ্জবাসীকে

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে বন্যা শেষ হয়েছে তিন মাসেরও বেশী সময় আগে। কিন্তু বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ভাঙ্গা রাস্তাগুলো দীর্ঘ তিন মাসেও সংস্কার না হওয়ায় চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।

গত ১৭ জুন থেকে শুরু হওয়া বানের পানির তোড়ে সদর ইউনিয়ন, কাকাইলছেও এবং বদলপুর ইউনিয়ন সহ উপজেলার ৩২ কিলোমিটার রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। কিন্তু বানের পানি নেমে যাওয়ার তিন মাসেও রাস্তা মেরামত না হওয়ায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ত্রিশটি গ্রামের লক্ষাধিক বাসিন্দা।

জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় জেলায় ৮৫১ কিলোমিটার সড়ক এবং ১৮৭ মিটার ব্রীজ,কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব মেরামতে প্রয়োজন ২শত ৪৫ কোটি টাকারও বেশী। ইতিমধ্যে ভাঙ্গা রাস্তাগুলোতে সংযোগ মেরামতের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার কাকাইলছেও-আজমিরীগঞ্জ সড়কে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার ভাটী সমিপুর ১টি, সদর ইউনিয়ের রনিয়ায় ৩টি, কাকাইলছেও ইউনিয়নের কালনীপাড়া ব্রিজের অংশে ১টি সহ মোট ৫টি অংশে বিশাল আকারের ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও কাকাইলছেও বাজার থেকে রসুলপুরের রাস্তাটি পুরোটাই ভেঙ্গে গেছে। একই অবস্থা বদলপুর-আজমিরীগঞ্জ সড়কেরও।

বদলপুর ইউনিয়নের কৈয়ারঢালা, বদলপুর, নদীপুর, নিকলীর ঢালাসহ মোট পাঁচটি অংশে বড় ধরনের ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। বন্ধ রয়েছে সব রকমের যানবাহন চলাচল। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের আভ্যন্তরীণ রাস্তা ঘাট ভেঙ্গে চলাচলের ভোগান্তিতে পড়েছে লাখো মানুষ।

একমি ল্যাবরেটরিজ এর বিক্রয় প্রতিনিধি শশাংক রায় জানান- মালামাল দোকানদারের কাছে পৌঁছে দিতে আগে যেখানে পাঁচ/ছয় শত টাকা খরছ হতো এখন তা ১ হাজার থেকে ১২শত টাকায় করতে হচ্ছে। রাস্তা সংস্কার না হওয়াতে খরছ ও সময় বেশী লাগছে।

কাকাইলছেও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব জানান- প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, রোগী, সাধারণ মানুষসহ হাজারো মানুষ উপজেলা সদরে যাওয়া আসা করেন। কিন্তু বন্যায় রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়াতে নৌকায় যেতে হয়। কোন রোগীকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিতে গেলে অনেক সময় রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।

আজমিরীগঞ্জ সরকারি ডিগ্রী কলেজের ছাত্রী পপি আক্তার বলেন- আগে ২৫/৩০ মিনিটে কলেজে আসতে পারতাম, কিন্তু রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়াতে অনেক কষ্টে যাওয়া আসা করতে হয়।

এ বিষয়ে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল বাছির বলেন- বন্যায় জেলায় ৮৫১ কিলোমিটার সড়ক এবং ১৮৭ মিটার ব্রীজ, কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব মেরামতে প্রয়োজন ২শত ৪৫ কোটি টাকারও বেশী। ইতিমধ্যে ভাঙ্গা রাস্তাগুলোতে সংযোগ মেরামতের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে এবং দরপত্র মূল্যায়ন ও সম্পন্ন করা হয়েছে। শীঘ্রই কার্যাদেশ প্রদানের মাধ্যমে সংস্কার, সংযোগ মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।