ফুটবল কিংবদন্তি ববি চার্লটন মারা গেছেন

ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের নায়কদের একজন এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের উজ্জ্বলতম তারকা ববি চার্লটন মারা গেছেন।

শনিবার পরিবারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।

‘অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আমরা জানাচ্ছি, শনিবার সকালে স্যার ববি মৃত্যুবরণ করেছে। মৃত্যুর সময় পরিবারের সদস্যরা তার পাশে ছিলেন। যারা তার এগিয়ে চলার পথে যত্ন নিয়েছেন, সমর্থন ও ভালোবাসা দিয়েছেন তাদের প্রতি পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা।’

১৯৩৭ সালের ১১ অক্টোবর ইংল্যান্ডের নর্দাম্বারল্যান্ডে জন্ম নেওয়া চার্লটন পেশাদার ফুটবল খেলেছেন প্রায় ২৪ বছর। ক্যারিয়ারের দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন ইউনাইটেডে। ক্লাবটির হয়ে করেছেন দুইশর বেশি গোল।

১৯৫৮ সালে ইউনাইটেডের মিউনিখ ট্র্যাজেডিতে বেঁচে যাওয়া খেলোয়াড়দের একজন ছিলেন চার্লটন। ওই দুর্ঘটনায় ২৩ জনের প্রাণহানি ঘটে। যেখানে ছিল ৮ ফুটবলার ও ৩ জন ক্লাব স্টাফ। পরে একসময় চার্লটন বলেন, দুর্ঘটনায় হারানো সতীর্থদের স্মৃতি সবসময় তাড়িয়ে বেড়িয়েছে তাকে।

আন্তর্জাতিক ফুটবলের সবচেয়ে বড় অর্জন ফিফা বিশ্বকাপের শিরোপা ইংল্যান্ডের হয়ে ১৯৬৬ সালে জেতেন চার্লটন। ওই আসরে ৩ গোল করে দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনে অবদান রাখেন তিনি। ক্লাব ক্যারিয়ারে আরও অনেক সাফল্যের সঙ্গে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে জেতেন ১৯৬৮ সালের ইউরোপিয়ান কাপ শিরোপা (বর্তমানের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ)। ওয়েম্বলিতে বেনফিকার বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচে তিনি করেন ২ গোল।

ব্যক্তিগত অর্জনের পাল্লাও বেশ ভারী চার্লটনের। ১৯৬৬ সালে বর্ষসেরা ফুটবলারের স্বীকৃতি ব্যালন দ’র জেতেন তিনি। পরের দুই বছর ব্যালন দ’রে রানার আপ হন সাবেক ইংলিশ ফরোয়ার্ড। এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ডের একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ে টুর্নামেন্টের সেরা ফুটবলারের গোল্ডেন বলও জেতেন তিনি। ১৯৭০ সালের জাতীয় দলের ক্যারিয়ারের ইতি টানেন চার্লটন। ইংল্যান্ডের তখনকার রেকর্ড সর্বোচ্চ ৪৯ গোল করেন তিনি।

খেলোয়াড়ি জীবন শেষে প্রাথমিকভাবে কোচিং করানোর সিদ্ধান্ত নেন চার্লটন। তবে বেশি দিন সেই পেশায় থাকেননি। পরে বিবিসির হয়ে দীর্ঘদিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়া ১৯৮৪ সালে ইউনাইটেডের পরিচালক হিসেবে ফেরেন তিনি। এর এক দশক পর পান ইংল্যান্ডের সম্মানসূচক নাইটহুড উপাধি। তার আগেই ১৯৬৯ সালে ওবিই, ১৯৭৪ তিনি পান সিবিই উপাধি।

২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বর্ষসেরা ক্রীড়াব্যক্তিত্ব হিসেবে তাকে আজীবন সম্মাননা দেয় বিবিসি। পরে তিনি ‘ফ্রিডম অব ম্যানচেস্টার’ পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের দক্ষিণ গ্যালারি তার নামে নামকরণ করা হয়।

সিলেট ভয়েস/এএইচএম