ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি নাকচ করে দিয়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজায় যুদ্ধ শেষ হলেও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করবেন তিনি। বিষয়টি তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুযারি) এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু গাজায় ‘সম্পূর্ণ বিজয় না হওয়া পর্যন্ত’ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, হামাসকে ধ্বংস এবং অবশিষ্ট ইসরাইলি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে ‘আরও অনেক মাস’ সময় লাগতে পারে।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, আমি আমাদের আমেরিকান বন্ধুদের এ সত্যটি জানিয়ে দিয়েছি। আমাদের ওপর এমন একটি বাস্তবতা (ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা) চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টাও আমি বন্ধ করে দিই যা ইসরাইলের নিরাপত্তার ক্ষতি করবে।
যুক্তরাষ্ট্রসহ ইসরাইলের মিত্ররা চিরশত্রু এই দুই দেশের সংঘাত নিয়ন্ত্রণে ‘দুই-রাষ্ট্র সমাধান’ প্রক্রিয়ার ওপর জোর দেন যেখানে ইসরাইল রাষ্ট্রের পাশাপাশি একটি ভবিষ্যত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে। এর লক্ষ্য- ওই অঞ্চলে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা। তবে এই প্রথম ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের চাপ প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করলেন। এ অবস্থায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের চিড় করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের কেউ কেউ।
প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রাচ্যের ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের কথা বলে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৮ সালে নিজেদের ভূমি থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে ইহুদিদের পুনর্বাসন করা হয়। তারও আগে থেকে ওই অঞ্চলের আরবদের উচ্ছেদ করে ব্রিটেন। এরপর থেকে অবৈধভাবে পর্যায়ক্রমে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে বসানো হয় ইহুদি বসতি। এমনকি মুসলমান, ইহুদি ও খ্রিস্টানদের কাছে পবিত্র আল-আকসা মসজিদও নিয়ন্ত্রণে নেয় জায়ানবাদীরা।
ফিলিস্তিনিদের ভূমি উদ্ধারের আন্দোলন নিয়ে বহু সংঘাত-যুদ্ধ হলেও যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেবল দ্বিরাষ্ট্রের সমাধানের কথা বলেছে। কার্যত তারা সমাধান করেনি। এখন ইসরাইল পুরো জেরুজালেম নগরীকেই তাদের রাজধানী বলে দাবি করে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুজালেমকে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে চায়। আল-আকসায় প্রার্থনায় বাধা ও ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ নিয়ে বিরোধ ও সংঘাতে প্রাণহানিও ঘটেছে প্রচুর। এমন পরিস্থিতিতে ফের দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাইডেন।