দলবদলের সূত্রে এবার আদালতে আইনি লড়াইয়ের মুখোমুখি হচ্ছেন নেইমার। সান্তোস থেকে বার্সায় পাড়ি জমানো নিয়ে জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ব্রাজিলের বিনিয়োগ সংস্থা ডিআইএসের করা মামলায় আগামী সপ্তাহে নেইমারকে আদালতে হাজিরা দিতে হবে। এই মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে পাঁচ বছর কারাবাসের শাস্তি পেতে হতে পারে তাকে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদন বলছে, নেইমার ছাড়াও এই মামলায় বিবাদী পক্ষে আছেন তার বাবা-মা। এছাড়া আছেন বার্সেলোনার সাবেক দুই প্রেসিডেন্ট সান্দ্রো রোসেল আর জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ। আরও আছেন সান্তোসের সাবেক প্রেসিডেন্ট ওডিলিও রদ্রিগেস। সোমবার (১৭ অক্টোবর) থেকে মামলার কার্যক্রম শুরু হবে বার্সেলোনায়।
মামলায় বলা হয়, সান্তোসে থাকাকালে নেইমারের ৪০ শতাংশ স্বত্বের মালিকানা ছিল ডিআইএসের কাছে। সান্তোস থেকে বার্সেলোনায় যোগদানের সময়ে নেইমারের প্রকৃত দলবদল ফি প্রকাশ করা হয়নি।
নেইমার এই অভিযোগ অস্বীকার করে ২০১৭ সালেই স্পেনের উচ্চ আদালতে আপিল করেছিলেন। তবে ৩০ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড সেই আপিলে হেরে যান। ফলে বিচার কার্যক্রমের পথ আরও প্রশস্ত হয়েছে।
ডিআইএসের করা মামলায় নেইমার ও তাঁর পরিবারের পক্ষে লড়তে যাওয়া আইনজীবী বেকার ম্যাকেঞ্জি জানান, দলবদলের কাজটি ব্রাজিলিয়ান নাগরিকদের মাধ্যমে করা হয়েছে। তাই নেইমারের পরিবারের বিচার করার আইনি এখতিয়ার স্প্যানিশ আদালতের কাছে নেই বলে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করা হবে।
মামলার বাদী অর্থাৎ স্প্যানিশ প্রসিকিউটররা নেইমারের শাস্তি হিসেবে দুই বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ মিলিয়ন (১ কোটি) ইউরো জরিমানা দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে নেইমারের দলবদলের সময়কালে বার্সেলোনার প্রেসিডেন্টের পদে থাকা সান্দ্রো রোসেলের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড।
এছাড়া, বার্সেলোনাকে ৮৪ লাখ ইউরো জরিমানা এবং স্প্যানিশ ক্লাবটির আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউর কারবাসেরও দাবিও তোলা হয়েছে। ডিআইএস সর্বমোট ১৪ কোটি ৯০ লাখ ইউরো জরিমানা এবং রোসেল-বার্তামেউর কারাদণ্ডেরও দাবি করেছে সংস্থাটি।
বার্সেলোনার সাবেক প্রেসিডেন্ট সান্দ্রো রোসেল এর আগেও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তার প্রতিনিধিরাও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
বেকার ম্যাকেঞ্জির একজন মুখপাত্র জানান, খেলোয়াড় কোনো সেবা বা পণ্যবস্তু না। তাই এক ক্লাব থেকে অন্য ক্লাবে পাড়ি জমানোর বিষয়টি খেলোয়াড়ের স্বাধীন ইচ্ছার উপর নির্ভর করে।
সোমবার বার্সেলোনার আদালতের প্রথম দিনের কার্যক্রমে নেইমারকে উপস্থিত থাকতে হবে। তবে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত মামলার শুনানি চলাকালেও তাকে হাজির হতে হবে কি-না, সেটি এখনও অনিশ্চিত। নেইমার, তার বাবা-মা, রোসেল এবং বার্তোমেউ আগামী শুক্রবার তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করবেন।