নানা ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়া গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলার আবেদনটি পর্যালোচনা করছে পুলিশ। পর্যালোচনা শেষে অভিযোগটি মামলা হিসেবে দায়ের হবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে শাহবাগ থানা পুলিশ।
শনিবার (৮ জুলাই) রাতে বিষয়টি জানিয়েছেন শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুর মোহাম্মদ।
তিনি জানান, গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলার যে আবেদনটি করা হয়েছে, সে বিষয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এছাড়া এ বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে থানা পুলিশ কথা বলবে। সে অনুযায়ী এ বিষয়ে থানা পুলিশ পদক্ষেপ নিবে।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ নামক তথাকথিত রাজনৈতিক দলের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর হজ করার কথা বলে বিদেশে সফরে গিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অস্বীকৃত ইসরায়েল রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকার উৎখাতের দেশবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। মোসাদ এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে নুরুল হক নুরের ছবি ও তার স্বীকারোক্তিমূলক কথোপকথন ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
‘আল্লাহর পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফের নাম করে বিদেশে গিয়ে ইহুদি চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নুরুল হক নুর প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্র, সরকার ও পবিত্র ধর্ম ইসলামের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির হীন চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন। সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফেসবুক লাইভে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়ার বক্তব্যে ইসরায়েলের মোসাদের সঙ্গে নুরুল হক নুরের যোগাযোগ ও আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে।’
মামলার আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিদ্রোহী জঙ্গি গোষ্ঠী কুকি-চীনের সঙ্গে নুরুল হক নুরের যোগাযোগ রয়েছে, যা দেশের প্রচলিত আইন পরিপন্থি এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ববিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে নুরুল হক নুরের যোগাযোগ প্রমাণ করে নুর বিদেশি শক্তির নির্দেশে জনগণের আবেগকে ব্যবহার করে রাজনীতির নামে প্রকৃতপক্ষে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চান। দেশের অভ্যন্তরে কুকি-চীনসহ কতিপয় জঙ্গি গোষ্ঠীকে ব্যবহারের মাধ্যমে নুরুল হক নুর রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
নুরুল হক নুর রাষ্ট্রদ্রোহিতামূলক অপরাধ সংগঠিত করেছেন বিধায় দণ্ডবিধির ১২৪ (ক), ১২০ (খ) ও ৫০৬ ধারায় মামলা দায়ের করা আবশ্যক বলে আবেদনে উল্লেখ করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ সাধারণ আল মামুন বলেন, মোসাদের সঙ্গে নুরুল হক নুরের যোগসূত্র ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া তিনি নানাভাবে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। তাই তার বিরুদ্ধে আজ আমি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদন করেছি। আশা করি, মামলাটি গ্রহণ করা হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।