নাচে-গানে আর শরৎবন্দনায় শ্রুতির আগমনী আহ্বান

ঋতুবৈচিত্র্যের দেশে শরতের আগমনী বার্তা ইট-পাথরের নগরে বোঝার উপায় নেই। আর বোঝা গেলেও নগরজীবনের ব্যস্ততায় উৎসব আয়োজন করা হয়ে ওঠে না। তবুও কিছু আয়োজন নগরবাসীকে এখনও জানান দিয়ে যায়- ঋতুচক্রের আবর্তে প্রকৃতিতে এসেছে শরত।

শনিবার ২৯ আশ্বিন (১৪ অক্টোবর) শ্রুতি সিলেট প্রতিষ্ঠার ২৩ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে কবি নজরুল অডিটোরিয়ামের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আগমনী আহ্বান। যা নগরবাসীর মনে এনে দেয় অপার প্রশান্তি। নীল-সাদা শাড়ি, খোঁপায়-হাতে ফুলের সাজ আর নাচে-গানে চলে শরৎবন্দনা। শরৎ উৎসবের মূল আয়োজনে পরিবেশন করা হয় গান-কবিতা-নৃত্য। ছিল ‘শরৎ কথন’ পর্ব। এতে ঋতুবৈচিত্র্যের দেশ বাংলাদেশের প্রকৃতির সুরক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।

এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রুতি সিলেটের সদস্যসচিব সুকান্ত গুপ্ত তার। উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার দেবজিৎ সিংহ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবারক হোসেন, বরেণ্য সাংবাদিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠক আল আজাদ, জেলা শিশু সংগঠক সাইদুর রহমান ভুঁইয়া।

আরো উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সাধারণ সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি রজত কান্তি গুপ্ত প্রমুখ। পাশাপাশি শরৎকথন পর্বে অংশ নেন শ্রুতি সমন্বয়ক সুমন্ত গুপ্ত।

সুমন্ত গুপ্ত তার বক্তব্যে বলেন, সোনালি রোদ্দুরের ঝিলিমিলি আর রাতের জ্যোৎস্নায় মাতোয়ারা মন। নদীতীরে বনের প্রান্তে অপরূপ শোভা ছড়ায় শুভ্র কাশফুল। শরতের কাশফুলে মুগ্ধ হয় না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াও দুস্কর। শ্রুতি সিলেট তার দীর্ঘ ২৩ বছরের পথ চলায় আলোরমিছিল, বর্ণমালার মিছিল, আঁধার ভেঙে আসুক, পিঠা উৎসব, বর্ষবরণ উৎসব, বর্ষা উৎসব, শরৎ উৎসবসহ নানা উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে আবহমান বাংলার ঐতিহ্য কে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরছে এবং তাদের এই কাজে যুক্ত করছে। যা আগামীর মানবিক বাংলাদেশ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।

দ্বিতীয় পর্বে সান্ধ্য অধিবেশনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী ভারতীয় হাই কমিশন সিলেটের সহকারী ভারতীয় হাই কমিশনার নিরাজ কুমার জওসয়াল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আধ্যাপক হিমাদ্রী শেখর রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মু: মাসুদ রানা।

অর্ধদিবস ব্যাপী আয়োজনে সমবেত নৃত্য, সংগীত, আবৃত্তি পরিবেশন করেন জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদ, গীতবিতান বাংলাদেশ, নৃত্যশৈলী, ছন্দনৃত্যালয়, সুরেরভূবন, নৃত্যরথ, ললিত মঞ্জরি, নৃত্যসুধা, সুরের ভূবন, পাঠশালা এবং একক সংগীত পরিবেশন করেন গৌতম চক্রবর্তী, বাউল সূর্যলাল, প্রদীপ মল্লিক, খোকন ফকির, পল্লবী দাশ মৌ, লিংকন দাশ প্রমুখ।