ধর্মঘটের ডাক দিলেন ব্রিটেনের রেলকর্মীরা

বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) থেকে ৫ দিনের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন ব্রিটেনের রেলকর্মীরা। ফলে রেলযোগাযোগ নির্ভর ব্রিটেনে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ লোকজন।

ব্রিটেনের কেন্দ্রীয় রেলওয়ে দপ্তর নেটওয়ার্ক রেলওয়ে সোমবার (২ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘৮ জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মী ধর্মঘটের কারণে দেশজুড়ে সীমিত আকারে পরিষেবা দেওয়া হবে। কিছু এলাকায় ট্রেন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধও থাকতে পারে।’

১৯৮০ সালে মার্গারেট থ্যাচার যখন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সে বছর দেশটির বিভিন্ন খাতের শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন। ৪০ বছর পর ফের একই বাস্তবতার সামনে এসে দাঁড়াল ব্রিটেন। দেশটির স্কটল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে তারাও ধর্মঘটে যাবেন।

অবশ্য কর্মজীবীদের এই ধর্মঘটের যৌক্তিক কারণও আছে। করোনা মহামারির কারণে অর্থনৈতিক স্থবিরতা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় ভয়াবহ মূল্যস্ফীতি শুরু হয়েছে ব্রিটেনজুড়ে। খাদ্য, আবাসন ও নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য সামগ্রী ও পরিষেবার দাম দিন দিন জনগণের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।

এদিকে, দেশটির সরকারি পরিষেবা খাতের কর্মীদের বেতন গত ১০ বছরে বাড়েনি। ফলে বর্তমান বেতন কাঠামোতে মাস পার করা তাদের জন্য দিনকে দিন কঠিন হয়ে উঠছে।

এই পরিস্থিতিতে শ্রমিক নেতারা সরকারের কাছে বেতন-ভাতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, বর্তমান বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যেন তাদের বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা হয়।

কিন্তু যুক্তরাজ্যের সরকার পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে— বর্তমানে তো বটেই, নিকট ভবিষ্যতেও মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।

ব্রিটেনের রেলকর্মীদের সংগঠন আরএমটি রেল ইউনিয়নের প্রধান মাইক লিঞ্চ বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা বাধ্য হয়ে এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে হলে কী কী পদক্ষেপ নিতে হয়— তা সবাই জানে, কিন্তু সরকার ইচ্ছে করেই এই সমস্যা জিইয়ে রেখেছে।’

এদিকে যুক্তরাজ্যের সরকারের তরফ থেকে রেলকর্মীদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে আলোচনার টেবিলে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির পরিবহনমন্ত্রী মার্ক হারপার।

মঙ্গলবার ব্রিটেনের টাইমস রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রেলকর্মীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘নতুন চুক্তি যদি করতে হয়, তাহলে শ্রমিকদেরকে অবশ্যই ধর্মঘটের পথ ছেড়ে আলোচনার টেবিলে আসতে হবে।’