নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনাকে সামনে নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন বছর। অতীতকে পেছনে ফেলে রেখে নতুন উদ্যমে নববর্ষকে বরণ করে নিচ্ছেন সবাই। তবে ভাগ্য ঘোরেনি ইউক্রেনের। নতুন বছরের শুরুতেই অর্থাৎ নববর্ষের শুরুতে মধ্যরাতে অসংখ্য বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছে রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের অনেক এলাকা।
এসময় ইউক্রেনজুড়ে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো হয়। রোববার (১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নববর্ষের দিন মধ্যরাতের প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের আশপাশের অন্যান্য জায়গায় অসংখ্য বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং সারা দেশে বিমান হামলার সাইরেন বেজেছে।
রয়টার্সের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিমান হামলার সাইরেন বাজলে কিয়েভের কিছু লোক তাদের বারান্দা থেকে ‘ইউক্রেনের গৌরব! বীরদের গৌরব!’ বলে চিৎকার করে ওঠেন।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা একটি ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করলে সেটির টুকরো পড়ে রাজধানী কিয়েভের কেন্দ্রে একটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে কোনও আহত বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেছেন।
কিয়েভের নগর সামরিক প্রশাসন বলেছে, রাশিয়ার নিক্ষোপ করা ২৩টি ‘এয়ার অবজেক্ট’ ধ্বংস করা হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নববর্ষ উপলক্ষে বার্তা দেওয়ার কয়েক মিনিটের মাথায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
রয়টার্সের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ক্ষয়ক্ষতির কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিবেদন ছাড়াই বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। এছাড়া খেরসন এবং উত্তর জাইটোমির অঞ্চলেও বিস্ফোরণের অনানুষ্ঠানিক খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে নতুন বছরের প্রাক্কালে রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনে ২০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে রাশিয়া। রয়টার্স বলছে, শনিবার ইউক্রেনজুড়ে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ২০টিরও বেশি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পর মধ্যরাতে এই আক্রমণগুলো হয় এবং ইউক্রেনের মানবাধিকার ন্যায়পাল দিমিত্রো লুবিনেটস এটিকে ‘নববর্ষের প্রাক্কালে সন্ত্রাস’ বলেছেন।
কিয়েভ শহর ও এই অঞ্চলের কর্মকর্তারা টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে বলেছেন, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাজ করছে। কিয়েভ অঞ্চলের গভর্নর ওলেক্সি কুলেবা বলেছেন, ওই অঞ্চলে ড্রোন হামলা চালানো হচ্ছে। কোনও লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা হয়েছে কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
পৃথকভাবে, ইউক্রেনের সাথে সীমান্তবর্তী বেলগোরোডের দক্ষিণ রাশিয়ান অঞ্চলের গভর্নর ব্য্যাচেস্লাভ গ্ল্যাডকভ বলেছেন, শেবেকিনো শহরের উপকণ্ঠে রাতে গোলাগুলির ফলে ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে, তবে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ইউক্রেন অবশ্য কখনোই প্রকাশ্যে রাশিয়ার অভ্যন্তরে কোনও হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণের জন্য এসব হামলাকে রাশিয়ার ‘কর্মফল’ বলে অভিহিত করে থাকে কিয়েভ।