তাহিরপুরে নৌ-পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতির নামে চাঁদাবাজি!

সুনামগঞ্জে তাহিরপুরের বিভিন্ন নৌঘাটে সময়ে সময়ে চাঁদাবাজদের বেপরোয়া শক্তি প্রদর্শন যেন থেমে নেই। কেউ কেউ রাজনৈতিক দলের প্রভাব বিস্তার করে, কখনো আবার নিজেকে নৌ পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি দাবি করে এসব চাঁদাবাজিতে জড়িত হচ্ছে। আবার চাহিদামত চাঁদার টাকার দিতে অসম্মতি জানালে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে।

সম্প্রতি উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের শ্রীপুর বাজার নৌঘাটের টোল আদায়ে বাধা প্রদানসহ এমন চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে একজনের বিরুদ্ধে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শ্রীপুর বাজার নৌঘাটের ইজারা নেন উজান তাহিরপুর গ্রামের হাফিজ উদ্দিন। তিনি এ বছরের মে মাস থেকে এই নৌঘাটের ইজারাদার হিসেবে মনোনীত হয়ে টোল আদায় করছেন। সম্প্রতি জামালগঞ্জ উপজেলার কামিনীপুর গ্রামের মৃত খোয়াজ আলীর ছেলে মো. জাকির হোসেন (৪০) এর বিরুদ্ধে শ্রীপুর বাজার নৌঘাট থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ আনা হয়েছে।

বলা হয়েছে, অভিযুক্ত জাকির হোসেনের ২১টি পণ্যবাহী নৌযান রয়েছে। যা দিয়ে কয়লা ও চুনাপাথর পরিবহনের কাজ করা হয়। কিন্তু এসব নৌযান থেকে কোনোরকম টোল দিতে চান না অভিযুক্ত জাকির হোসেন। পাশাপাশি নৌঘাট থেকে প্রতি মাসে ২০হাজার টাকা চাঁদা দাবি করছেন তিনি।

তাছাড়া বিগত দিন ধরে অভিযুক্ত জাকির হোসেন টোল ছাড়াই তার পণ্যবাহী নৌযানগুলো দিয়ে পরিবহনের কাজ করছেন। তার এই অন্যায় কাজে বাঁধা দিতে গেলে টোল আদায়ের দায়িত্বে থাকা লোকজনসহ ইজারাদারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে জাকির হোসেন ও তার লোকজন।

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, অভিযুক্ত জাকির হোসেন একটি রাজনৈতিক দলের প্রভাব বিস্তার করে ও নিজেকে নৌ পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি দাবি করে এসব চাঁদাবাজির মত কর্মকান্ড করে বেড়াচ্ছে। তার এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই ইজারাদার।

একটি রাজনৈতিক দলের প্রভাব বিস্তার করে অনৈতিক কাজ ও নিজেকে নৌপরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি হিসেবে দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত জাকির হোসেন জানান, ‘আমি কোনো চাঁদাবাজির সাথে জড়িত না। আমার ২১টি নৌযানও নেই। আমার দুটি পণ্যবাহী নৌকা আছে এবং যা দিয়ে সরকার নির্ধারিত টোল পরিশোধ করে পরিবহনের কাজ করছি। ইজারাদার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য ছড়াচ্ছে। আমিও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।’

অভিযোগকারী শ্রীপুর বাজার নৌঘাটের ইজারাদার হাফিজ উদ্দিন জানান, ‘জাকির হোসেনের অনৈতিক আবদার ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছি। টোলের হার উল্লেখ করে নৌঘাটে সাইনবোর্ড ঝুলানো আছে। জাকির হোসেন নির্ধারিত টোলের টাকা পরিশোধ তো করেই না উল্টো প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করছে। প্রতিবাদ করলে উল্টো নিজেকে নৌপরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি দাবি করে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।’

তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে সত্যতা মিললে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’