হবিগঞ্জ সরকারি বৃন্দাবন কলেজে সাড়ে চার কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সহকারী শাহ মো. আব্দুল বশির ও ক্যাশিয়ার বাবুল মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মাসুদুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বুধবার এই বরখাস্তের চিঠি দেন অধিদপ্তরের সাধারণ প্রশাসন শাখার উপ-পরিচালক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস।
আব্দুল বশির ও বাবুল মিয়ার বরখাস্তের আদেশ কার্যকর হবে ২০১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে। এক্ষেত্রে এ দুজনের চার বছরের বেতনের অর্ধেক টাকা জমা দিতে হবে সরকারি কোষাগারে।
এর আগে ২০১৯ সালে বরখাস্ত হয়েছিলেন কলেজটির সাবেক অধ্যক্ষ বিজিত ভট্টাচার্য্য। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলা চলমান।
জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের পদে কর্মরত ছিলেন বিজিত ভট্টাচার্য্য। এ সময় ৫টি খাতে কলেজের সাড়ে ৪ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পরে ২০১৪ সালে অধ্যাপক বদরুজ্জামান চৌধুরী অধ্যক্ষের পদে যোগ দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩১টি খাতে ২ কোটি ৯৪ লাখ ১৮১ টাকা আদায় করা হয়। কিন্তু ব্যাংকে জমা ছিল মাত্র ১১ লাখ ১২ হাজার ৮১৩ টাকা। একই সময়ের মধ্যে ব্যাংকে লেনদেন হয় ১ কোটি ৬৫ লাখ ১২ হাজার ৯৫৭ টাকা। যার মধ্যে ১ কোটি ১৮ লাখ ৪১১ টাকা ব্যাংক হিসেবে স্থিতি থাকার কথা থাকলেও তা ছিল না। হদিস পাওয়া যায়নি কলেজের ১ কোটি ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪১১ টাকার। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি ১ কোটি ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ৪১১ টাকা জমা না দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয় বলে প্রতিবেদন জমা দেয়।
এরপর ২০১৯ সালে এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করে দুদক। পরে সংস্থাটির পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ বিজিত ভট্টাচার্য্য, প্রধান সহকারী শাহ মো. আব্দুল বশির ও ক্যাশিয়ার বাবুল মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হলে অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করা হয়। দুদকের এ মামলাটি এখন সিলেটের বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন।