বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ শিশির মনির বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামী ক্লিন ইমেজের দল। মানুষের মতামত নিয়ে ভবিষ্যতে প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতি করতে চায় জামায়াত। মানুষ যাকে পছন্দ করবে তারাই ক্ষমতায় আসবে। যাদেরকে মানুষ পছন্দ করবে না তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না এটাই স্বাভাবিক।’
রবিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে সুনামগঞ্জ শহরের শহীদ জগৎজ্যোতি পাঠাগার মিলনায়তনে সুনামগঞ্জে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ সব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দিরাই শাল্লার প্রায় ৩৬ টা পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখেছি। সবাই শান্তিতে যে যার মত করে তাদের উৎসব পালন করছেন। আমি বিগত কয়েক দিন ধরে সুনামগঞ্জের প্রতন্ত অঞ্চলে ঘুরেছি। আমার দল চাইলে আমি নির্বাচন করবও না হলে করবও না।’
সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর ও রুনি হত্যা মামলার প্রসঙ্গে এ মামলার নবনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে তিনি বলেন, ‘সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড হয়েছে ২০১২ সালে। প্রায় ১২ বছর পর একটা টাস্কফোর্স গঠন করে এটি তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ছয় মাস সময় দেওয়া হয়েছে সরকারকে তারা যেনো এই রিপোর্টটি সাবমিট করে।’
‘যেহেতু আমি যুক্ত হয়েছি, এর প্রাথমিক যে নথি দেখার সুযোগ হয়েছে। মামলাটি যেহেতু আন্ডার ইনভেস্টিগেশন, ইনভেস্টিগেশনে থাকা অবস্থায় সব কিছু বলা যায় না। শুধু এটুকু বলা যায়, আমার কাছে মনে হয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইনডিকেশন আছে। যে ইন্ডিকেশন ধরে তদন্ত করতে পারলে এর হয়তো শেষ অংশে যাওয়া সম্ভব,’ বলেন তিনি।
আইনজীবী মনির আরো বলেন, ‘বেশ কিছু সেনসিটিভি মানুষের নাম আছে। সংবেদনশীল মানুষ এর সঙ্গে জড়িত মর্মে প্রাথমিক কর্মকাণ্ডে বোঝা যায়। সেই সংবেদনশীল ব্যক্তিবর্গের নাম আমি এখানে বলছি না। তবে আমার কাছে মনে হয় এখন তদন্তটা প্রপার ডাইরেকশনে আছে। যে জায়গায় গিয়ে থেমে গিয়েছিল এই জায়গায় সরকার এখন আর বাধা দিচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু বাধা দিচ্ছে না, দুয়েকটি স্টেটমেন্ট আসছে, খুবই সেনসিটিভ স্টেটমেন্ট, সেনসিটিভ ইনফর্মেশন। এর জন্য আমার কাছে মনে হয় অগ্রগতি হবে, প্রপার লাইনে অগ্রসর হতে পারলে। তার মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট আছে ডিএনএ রিপোর্ট। সাগর এবং রুনির গায়ে দুজন ব্যক্তির ডিএনএ শনাক্ত করা গেছে। এই দুজন ব্যক্তি কে তা খোঁজা হচ্ছে। আশা করি স্বল্প সময়ের মধ্যেই এ দুজনের তথ্য আপনারা জানতে পারবেন। তবেই জিনিসটা সঠিকভাবে নেয়া সম্ভব হবে।’
আইনজীবী মনির বলেন, ‘আপাতত কোনো বাধা নেই, উদ্দেশ্যের কোনো সংকট নেই। সরকারের আগ্রহের কোনো ঘাটতি দেখা যাচ্ছে না। বাকিটা ছয় মাসের মধ্যে সব তদন্ত সম্পন্ন হলেই জানতে পারবেন।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে সরকার আমাদের মতামত চেয়েছিল, আমার বলেছি এটি সম্পূর্ণরূপে বাদ দেয়ার জন্যে। কোনো সভ্য সমাজে এমন আইন থাকতে পারে না। মানুষের যদি কথা বলার স্বাধীনতা থাকে না তাহলে মুক্ত সাংবাদিক, গণতন্ত্র ও মানুষের বাকস্বাধীনতা থাকবে না। এই আইন সম্পূর্ণরূপে বাদ হওয়া প্রয়োজন।’
মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের আমীর তোফায়েল আহমেদ ও নায়েবে আমীর অ্যাডভোকেট শামসুদ্দিন।