ছাত্রদল করায় ন্যাশনাল সার্ভিসের এক কর্মীর দুই মাসের বেতন আটকে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মো. মামুন মিয়া (২৫) নামের এক কর্মী।
এর প্রতিবাদে রবিবার (২৩ জুলাই) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে একাই মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছেন মামুন মিয়া। এ সময় বেতন-ভাতা পরিশোধসহ কর্মস্থলে পুনর্বহালের দাবি জানান তিনি।
মামুন মিয়া সদর ইউনিয়নের নাসিরপুর গ্রামের অলি মিয়ার ছেলে এবং সদর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহসভাপতি। তিনি যুব উন্নয়ন অধিদফতরের ন্যাশনাল সার্ভিস উন্নয়ন কর্মসূচির অষ্টম পর্বে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়ে নাসিরনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতরে কর্মরত ছিলেন।
দুপুরে ব্যানার নিয়ে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে মামুন মিয়া দাবি করেন, সরকারী পাইলট প্রকল্প ন্যাশনাল সার্ভিস উন্নয়ন কর্মসূচির অষ্টম পর্বে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে মনোনীত হন। পরে যুব উন্নয়ন কার্যালয় থেকে নাসিরনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে তাকে পদায়ন করা হয়। সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত চাকরি করে আসছিলেন।
মামুন জানান, আড়াই মাস আগে উপজেলার কলেজ মোড়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। তখন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিনকে আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান মামুন। ফেসবুকে সেই ছবি দেখে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. নূরে আলম ক্ষুব্ধ হন। এরপর মাসিক বেতনের প্রত্যয়নপত্র নিতে গেলে তাকে কর্মস্থলে যেতে নিষেধ করেন। কারণ হিসেবে ছাত্রদল করার কথা বলেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। কর্মস্থলে গেলে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি।
মামুন বলেন, ‘এপ্রিল ও মে মাসের বেতন দেওয়া হয়নি। জুন থেকে অফিসে যেতে নিষেধ করেছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। বেতনের প্রত্যয়নপত্র নিতে গেলে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ায় এ সংক্রান্ত কাগজপত্র দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়। অফিসে গেলে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের চাকরিবিধিতে কোনও রাজনৈতিক দল করা যাবে না—এমন কথা উল্লেখ না থাকলেও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেছেন, ছাত্রদল করা যাবে না। আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। আমি চাকরি ফিরে পেতে চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. নূরে আলম বলেন, ‘মামুন কোন রাজনৈতিক দল সমর্থন করে কিংবা না করে সেটা দেখার বিষয় নয়। সে কাজে অনিয়মিত এবং দীর্ঘদিন ধরে কার্যালয়ে আসে না। তাই যুব উন্নয়ন কার্যালয় তার বেতন বন্ধ করে দিয়েছে। তাকে কার্যালয়ে আসতে কিংবা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে নিষেধ করিনি। আমি তাকে নিষেধ করেছি, এর প্রমাণ দেখাতে বলেন।’
মামুনের দুই মাসের বেতন কেন আটকে রাখা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তার বেতন বন্ধ করিনি। কেন বেতন আটকে রাখা হয়েছে, তা জানে যুব উন্নয়ন কার্যালয়। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমাকে জানানো হয়নি। তবে খোঁজখবর নিয়ে দেখবো, আসলে কী হয়েছে।’
সূত্র : বাংলাট্রিবিউন