হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘শিশুকে কোনোরকম আঘাত আর নয়, শিশুর শৈশব করি আনন্দময়’ – এই স্লোগানকে সামনে রেখে হবিগঞ্জের শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে এই র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে, বাংলাদেশের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ইউনিসেফ’র সাহায্যপুষ্ট একসিলারেটিং প্রোটেকশন ফর চিলড্রেন (এপিসি) প্রকল্পের আওতায় শারীরিক শাস্তি নির্মূলে সচেতনতা তৈরির জন্য প্রথমে র্যালি ও পরে উপজেলা পরিষদের হলরুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকাল ১১টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ ভৌমিকের সভাপতিত্বে ও এপিসি প্রকল্পের সিআরএফ রোমেনা আক্তার মুক্তার সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির লস্কর।
এতে আরও বক্তব্য দেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান মহালদার, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুমানা আক্তার, উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিপ্লব কান্তি দে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের শিশু সমাজকর্মী রাব্বি আক্তার ও জেন্ডার প্রমোটার শাওন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আজকের শিশুরাই আগামীদিনের ভবিষ্যৎ। তাই শিশু, কিশোর, কিশোরী নির্যাতন প্রতিরোধে আমাদের সকলের সচেতনতা একান্ত কাম্য। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে আজকের শিশুকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। কারণ আজকের শিশুরাই আগামীর দেশ পরিচালনা করবে। সামাজিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে এই সংকটাপন্ন পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।
তারা বলেন, শিশুর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতিসাধন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এসব আইন ও নিয়মনীতি থাকার পরেও যথাযথ প্রয়োগ ও সচেতনতার অভাবে বাস্তব চিত্র অনেকটাই ভিন্ন এবং করোনা পরিস্থিতিতে ও পরবর্তী অবস্থায় তা আরও সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সকল পর্যায়ে শিশুর প্রতি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধে শিশু আইনের ৭০ ধারার সংস্কার করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে আইনে দুর্যোগকালে শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা যেমন বিবেচনায় আনতে হবে, তেমনি শিশুর প্রতি লঘু শাস্তি প্রদানকেও অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। সর্বোপরি শিক্ষক ও অভিভাবকদের এই আইন ও আইনের বিদ্যমান ধারার ব্যাপারে সচেতন করতে হবে।
বক্তারা শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ করার জন্য তাৎক্ষণিক প্রশাসনিক সহায়তা পেতে জাতীয় ১০৯৮ কল করার আহ্বান জানান।
এ সময় চুনারুঘাট উপজেলার শিশু ও কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সদস্য, অভিভাবক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।