চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবিতে মিছিল-সমাবেশ

নূন্যতম জাতীয় মজুরী ২০ হাজার টাকা, চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৫০০ টাকা, তাদের ভূমি অধিকার বাস্তবায়ন, এরিয়ার বিল পরিশোধ ও অত্যাবশ্যকীয় পরিসেবা বিল ২০২৩ বাতিলের দাবী জানিয়ে সিলেটে মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন।

বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের ১০ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (১৪ জুলাই) সংগঠনটির জেলা শাখার উদ্যোগে এই মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সংগঠনের সিলেট জেলা শাখার আহ্বায়ক মোখলেসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ রুদ্র।

সভায় বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সহ-সভাপতি জিতু সেন, চা শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বিরেন সিং, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজন ঘোষ, দপ্তর সম্পাদক অজিত রায়, অর্থ সম্পাদক নমিতা রায়, সদস্য হৃদয় লোহার প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমানে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ক্রমাগত বেড়ে চলছে। অথচ চা বাগান, গার্মেন্টস, নির্মাণসহ সংগঠিত অসংগঠিত সর্বস্তরের শ্রমিকদের জীবনধারণের প্রয়োজনে ন্যূনতম মজুরীর দাবি উপেক্ষিত। সর্বজনীন রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবি সম্পূর্ণ অস্বীকৃতির পথে ঠেলে দেয়া হয়েছে। পাটকল-চিনিকলসহ রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। নেই স্থায়ী কোন কর্মঘণ্টা, বাধ্যতামূলক শ্রম,পরিচয়পত্রহীন ঝুঁকিপূর্ণ ও নিরাপত্তাহীন কর্মস্থল, ছাঁটাই-নির্যাতন ইত্যাদিতে ভয়াবহ শ্রম পরিবেশ বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার প্রদানসহ বাঁচার দাবিতে ব্যাপক ঐক্যবদ্ধ শ্রমিক গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

তারা বলেন, চা শ্রমিকের দৈনিক মজুরি মাত্র ১৭০ টাকা, আবার শিক্ষা, চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত চা শ্রমিকদের ভূমির আইনি কোন অধিকার নেই। তাছাড়া গত ২০২১-২০২২ সালের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় ৭ মাস। এখনো ২০২৩-২০২৪ সালের নতুন চুক্তি সম্পাদন করা হয় নি। এমনকি, গত মেয়াদের এরিয়ার বিল (বকেয়া পাওনা) প্রায় ৩০ হাজার টাকা এখনও পূর্ণাঙ্গ প্রদান করা হয় নি। ৩০ হাজার টাকার মধ্যে মাত্র ১১ হাজার টাকা নিতে শ্রমিকদেরকে বাধ্য করা হয়েছে।

মালিকশ্রেণি ও সরকারের এই অত্যাচার নিপীড়নের বিরুদ্ধে শ্রমজীবীদের সঠিক নেতৃত্ব ও সঠিক শ্রেণি চেতনার ভিত্তিতে ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন গড়ে তোলার সংকল্প নিয়ে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন এর যাত্রা। তাই ১০ বছরের ধারাবাহিকতায় সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করে ঐক্যবদ্ধ বিপ্লবী শ্রমিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান বক্তারা।

সমাবেশ শেষে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ও লাল পতাকাসহ একটি মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহিদমিনারের সামনে শেষ হয়।