সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় অধ্যক্ষের হামলায় প্রভাষক আহতের ঘটনায় এম. সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামের অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সচেতন অভিভাবকবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় কলেজের ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ কলেজ গেইট থেকে মিছিল নিয়ে বাহির হয়ে উপজেলা পরিষদ মাঠে মানববন্ধন করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবরে শিক্ষকের উপর ন্যাক্কারজনক ঘটনায় অধ্যক্ষের অপসারণ ও বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা ব্ক্তব্যে বলেন, ‘অধ্যক্ষের হাতে শিক্ষকের লাঞ্ছনা ও মারপিটের ঘটনা লজ্জাজনক এ ঘটনা আমরা মেনে নিতে পারছি না। মানুষ গড়ার কারিগর অধ্যক্ষ যখন অমানবিক কাজ করে তখন আমরা না পারতেই রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছি।’
ইকবাল হোসেন স্যারের উপর নির্যাতনকারী অধ্যক্ষের কঠোর শাস্তি দাবী করে তারা অধ্যক্ষ কলেজ থেকে অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষা-কার্যক্রম বন্ধ রেখে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি করেন। এছাড়া এই শিক্ষক নির্যাতনকারী অধ্যক্ষের শাস্তির দাবীতে উপজেলার সকল মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেন আন্দোলনকারীরা।
শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, এর আগেও বিভিন্ন সময় অধ্যক্ষের দুর্নীতির বিষয়ের কথা বলতে গিয়ে একজন শিক্ষকের বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি।
এম. সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ মোর্শেদ আলম বলেন, গত বুধবার (২৪ আগস্ট) কলেজ চলাকালে শিক্ষকদের মিটিংয়ে কলেজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় অধ্যক্ষের কিছু কথায় সম্মতি না দেওয়ায় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক ইকবাল হোসেনকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও মারপিট করে আহত করেন অধ্যক্ষ।’
তিনি আরও বলেন- ‘এই কলেজ প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত অধ্যক্ষ বিভিন্নভাবে দুর্নীতি করে আসছেন, আমরা এসব ঘটনায় প্রতিবাদ করতে গিয়ে অধ্যক্ষের রোষানলে পড়তে হয়েছে।’
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার একমাত্র ডিগ্রি কলেজ এম. সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজ। সিলেট বিভাগে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কলেজকে সরকারি করা হলেও অধ্যক্ষের অবহেলায় সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজ সরকারিকরণ হয়নি বলে অভিযোগ করেন শিক্ষকরা।
মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন, এম. সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোর্শেদ আলম, বিপেষ রঞ্জন রায়, জ্যেষ্ঠ প্রভাষক আব্দুর রাশিদ, জয়নাল আবেদীন, শামিমআরা বেগম, আব্দুর রশীদ, জাহাঙ্গীর সেলিম, প্রভাষক শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন, উজ্জ্বল চৌধুরী, কমলেষ বিশ্বাস, সব্যসাচী তালুকদার, আশরাফ হোসেন ও কলেজের ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী সপ্তাহ থেকে পাঁচ দিন ক্লাস নেওয়ার নির্দেশনা হিসেবে রুটিন তৈরি করা হয়েছিল। এক শিক্ষক সে রুটিন নিয়ে ছিড়ে ফেলেন। এতে আমি তাঁকে আমার কক্ষ থেকে বেড়িয়ে যেতে বলেছিলাম। তাঁর গায়ে হাত তোলা হয়নি।
তিনি বলেন, বিষয়টি বুধবারই সমাধান হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এতে জড়ানো হয়েছে।