কুলাউড়ায় ফল ব্যবসায়ীকে হত্যায় অংশ নেয় ৩ জন

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নে জয়নাল মুন্সি নামে রাজনগরের টেংরা বাজারের ফল ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা গেলেও তাকে ও তার সহযোগীদের ধরতে বিফলে গেছে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলেন ৩ জন। মৃত্যুর আগ মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্থানীয়দের প্রচার করা এক লাইভে হত্যাকারীর নাম-ঠিকানা বলে গেছেন নিহত জয়নাল মুন্সি। আর এরই সূত্র ধরে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

নোয়াবাগিচার বাসিন্দা ও আশপাশের লোকজন জানান, সোমবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এক ব্যক্তির চিৎকার চিৎকার শুনে তারা এগিয়ে এসে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় জয়নাল মুন্সি মাটিতে ছটফট করছেন। এসময় বাউল সরওয়ার নামে এক ব্যক্তি নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ঘটনাটি সরাসরি (লাইভ) সম্প্রচার করেন।

ওই সময় আহত অবস্থায় জয়নাল মুন্সি জানান, জয়চন্ডী এলাকার মুছা মিয়া নামে এক ইমামের মাধ্যমে তিনি এখানে এসেছেন। ওই ইমামের সাথে আরও দু’জন যুবক ছিলেন। সন্ধ্যার পর নোয়াবাগিচা বাগানের পাশে আসামাত্র সঙ্গে থাকা যুবক তার পেটে ছুরিকাঘাত করে এবং তারা ৩ জন পালিয়ে যায়।

ঘটনাস্থলের পাশের বাড়ির দুই নারী জানান, ঘটনার কিছু সময় পর দুই যুবককে ঘটনাস্থলের পাশের খাল দিয়ে দৌড়ে যেতে দেখেছেন তারা।

এদিকে নিহত জয়নালের কথার সূত্র ধরে মুছা নামক ব্যক্তির পরিচয় বের করতে সক্ষম হয়েছেন স্থানীয় লোকজন। তার পুরো নাম মসনব ইসলাম মুছা। তিনি জয়চন্ডী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচপীর জালাই এলাকার মৃত শামছুল ইসলামের ছেলে।

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মনু মিয়া জানান, মসনব ইসলাম মুছা তার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার জানামতে মুছা রাজনগর উপজেলার দত্তগ্রাম এলাকার একটি মসজিদে ইমামতি করেন।

নিহতের ছেলে মাছুম মিয়া বলেন, মুছা হুজুরের ফোন পেয়ে আমার বাবা বিকেলে দোকানে আমাকে বসিয়ে রেখে কুলাউড়ায় যান। মুছা আমাদের গ্রামের মসজিদে ইমাম হিসেবে দায়িত্বপালন করেছিলেন। সেজন্য আমার বাবার সাথে ভালো সম্পর্ক ছিল। মুছার সাথে আমার বাবার ব্যবসায়িক কিছু লেনদেনও ছিল।

কুলাউড়া হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নুসরাত জাহান জানান, জয়নাল মুন্সিকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। তার পেটের বামদিকে ছুরিকাঘাতের গভীর ক্ষতের চিহ্ন ছিল। ধারণা করা হচ্ছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুছ ছালেক বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আর্থিক লেনদেনের কারণে জয়নালকে হত্যা করা হতে পারে। জড়িতদের ধরতে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের পূর্ব রংগীরকুল এলাকার নোয়াবাগিচা বাগানের পাশে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জয়নাল রাজনগর উপজেলার দত্তগ্রাম এলাকার বাসিন্দা এবং টেংরা বাজারের একজন ফল ব্যবসায়ী।