সিলেটের কানাইঘাট পৌরসভার শ্রীপুর টুকেরবাজার রাস্তা পাকাকরণ কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। এতে স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষুব্দ হয়ে উঠেছেন। অনিয়মের বিষয়টি সামনে চলে আসায় জনসাধারনের আপত্তির মুখে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এমন বাস্তবতায় চরম জনর্দুভোগ দেখা দিয়েছে।
গেল শুক্রবার কাজের স্থলে গেলে স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন থেকে কানাইঘাট পৌরসভার টুকেরবাজার হতে দলইমাটি পর্যন্ত ৫’শ মিটার রাস্তা ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে পাকাকরণ কাজ শুরু হয়েছে।
কানাইঘাট পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কেএইচএম আব্দুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক খাজা শামীম আহমদ শাহীন, উপজেলা জাতীয়পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাবুল আহমদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিলাল আহমদ, মুহিবুর রহমানসহ এলাকার অনেকেই জানান, সিডিউল অনুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ না করে সম্পূর্ণ তার মনগড়াভাবে করে যাচ্ছে।
এ সময় তারা বলেন রাস্তা আরসিসি ঢালাইয়ের পূর্বে বক্স তৈরীর ক্ষেত্রে ১০ইঞ্চি গভীর করে মাটি ও বালু ফিলিং করে কম্পেকটেড রোলার করার কথা সিডিউলে বলা হলেও এখানে কোন ধরনের রোলার করে বেড তৈরী করা হয়নি। এমনকি পুরনো পাকা সম্পূর্ণ ৪ ইঞ্চি লোজ করে রোলার দিয়ে কম্পেকশন করে বালু ছিটিয়ে রাস্তার বেড সমান করার কথা থাকলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তা না করে পুরানো পাকার উপর আরসিসি ঢালাই করে যাচ্ছে। ঢালাই কাজে ১বস্তা সিমেন্টে সাথে ১.২৫ফুট বালু ও ১৬, ১২, ২০ মিলি সাইজের পাথর মিলিয়ে মোট ২.৫ফুট পাথর দেয়ার পরিবর্তে সেখানে ১ বস্তা সিমেন্টের সাথে ৯ টুকরী বালু ও ৪ আপ সাইজের ৪ টুকরী পাথর মিশিয়ে ঢালাইয়ের কাজ করা হচ্ছে।
তারা আরও অভিযোগ করেন, খাচার দৈর্ঘ্যে ২৬ পিস রডের পরিবর্তে ২৪ পিস ও প্রস্তে ৬১টি পিস রডের পরিবর্তে ৫৬ পিস রড দিচ্ছে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাছাড়া ডুয়েলবার ৬ সুতি রড প্রতি খাঁচার জয়েন্টে প্লাস্টিক পাইপের ভিতর ৩ ফুট ৪ ইঞ্চি লম্বা, ১০টি রডের পরিবর্তে কোন ধরনের প্লাস্টিক ছাড়া মাত্র ১ ফুটি ৩টি করে রড বসানো হচ্ছে। সিডিউলে এডমিক্সারের কথা বলা হলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তা না করে সম্পূর্ণ তার মনগড়াভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এমনকি সিডিউলের সাথে কাজের কোন ধরণের মিল না থাকায় এলাকার মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দেয়। একপর্যায়ে সাধারণ মানুষ নিয়ম অনুযায়ী কাজ করার জন্য চাপ দিলে জনরোষে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি বন্ধ করে রেখেছে বলে তারা জানিয়েছেন।
এদিকে বর্তমানে কাজটি বন্ধ থাকায় বিশেষ করে পৌরসভার ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডে জনর্দুভোগ দেখা দিয়েছে। তারা কোন ধরণের যানবাহন নিয়ে বাসা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। এমনকি রোগীসহ শিক্ষার্থীরাও চরম বিপাকে পড়েছেন।
এ বিষয়ে কাজের ঠিকাদার হোসন আহমদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাস্তার কাজ সিডিউল অনুযায়ী করা হচ্ছে। পৌরসভার দু’জন ইঞ্জিনিয়ার নিয়মিতভাবে উপস্থিত থেকে কাজের তদারকী করছেন। কাজে কোন ধরনের অনিয়ম দুর্নীতি হচ্ছে না।
শ্রীপুর-দলইমাটি সড়কের নির্মাণকাজে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে পৌরসভার প্রকৌশলী মনিরুদ্দিন বলেন, ‘সড়কের উন্নয়নমূলক কাজ পৌরসভার তদারকীর মাধ্যমে সিডিউল অনুযায়ী করা হচ্ছে। এতে কোন ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না। যারা বলছেন কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে না, তারা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে পারতেন। কিন্তু কাজ বন্ধ করে দেওয়ার কোন সুযোগ নেই বলে জানান তিনি।