কর অঞ্চল-সিলেট এর কর কমিশনার মো. আবুল কালাম আজাদ ও কর্মকর্তাবৃন্দের সাথে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় সিলেট চেম্বারের কনফারেন্স হলে ব্যবসায়ীদের কর বিষয়ক সমস্যাবলী নিয়ে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কর কমিশনার বলেন, সিলেট নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ধারণা বেশ ভালো। সিলেটের ব্যবসায়ীরা ট্যাক্স প্রদানে আগ্রহী। যার প্রমাণ তারা অতীতেও রেখেছেন। এমনকি করোনা মহামারীকালীন সময়েও সিলেটের ব্যবসায়ীরা কর প্রদানের ধারা স্বাভাবিক রেখেছেন।
ট্যাক্স ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দ্রুত প্রদানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন রয়েছি, তবে একসাথে যখন বেশী ফাইল জমা পড়ে তখন ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রদানে কিছুটা বিলম্ব হয়। আমাদের অনলাইন সিস্টেমে কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যা রয়েছে, তবে অচিরেই তা সমাধান হয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’
উন্নত বিশ্বের মত করদাতাদের অবসরকালীন ভাতা প্রদানের বিষয়ে কর কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ এখনও ওই স্থানে যেতে পারেনি, তবে আমাদের বিশ্বাস এটিও একদিন বাস্তবায়িত হবে। আমরা কখনই সরকারের পলিসির বাইরে যেতে পারি না, নীতিমালা অনুযায়ী আমাদেরকে কাজ করতে হয়। তবে ছোট ছোট সমস্যাগুলো আমরা নিয়মিত বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করতে পারি।’
তিনি আগামীতে সিলেট চেম্বার ও কর বিভাগের মধ্যে নিয়মিত সভা আয়োজনের প্রস্তাব করেন। এছাড়াও তিনি কর প্রদানে বিরাজমান সমস্যাবলী সম্পর্কে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-কে লিখিতভাবে জানানোর অনুরোধ জানান।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, ব্যবসায়ীরা কর ও রাজস্ব প্রদানের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখেন। তাই ব্যবসায়ীদের সুবিধা-অসুবিধা দেখা সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য। তিনি কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে গিয়ে নিয়মিত করদাতাদের উপর করের বোঝা না বাড়িয়ে করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধির দাবী জানান।
তিনি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান সমূহের ফাইল ঢাকায় প্রেরণ না করে সিলেটেই এর সুরাহা করা এবং কোম্পানীর ট্যাক্স হিস্ট্রি দেখে অডিটে দেওয়ার অনুরোধ করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘যেহেতু আমরা গাড়ি ক্রয়ের সময় তার ট্যাক্স প্রদান করি সেহেতু একই গাড়ি ট্যাক্স ফাইলে পুনরায় দেখানো যুক্তিসঙ্গত নয়।’ তিনি এই বিধান রহিত করার দাবী জানান। এছাড়াও তিনি ট্যাক্স ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দ্রুততার সাথে প্রদান, রিটার্ন জমা দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে তা এনবিআর এর ওয়েবসাইটে আপডেট করা এবং কর প্রদানে ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধকরণে নিয়মিত সেমিনার আয়োজনের প্রস্তাব করেন।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত কর কমিশনার হেমল দেওয়ান। সভায় আয়কর বিষয়ে সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন যুগ্ম কর কমিশনার মর্তুজা শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, নতুন সরকারী নিয়ম অনুযায়ী বিআইএন সার্টিফিকেটের মত হালনাগাদ টিআইএন সার্টিফিকেটও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দেওয়ালে টাঙিয়ে রাখতে হবে, অন্যথায় ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান করা হয়েছে। তিনি এ বিষয়টি বাস্তবায়নে চেম্বারের সহযোগিতা কামনা করেন।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন উপ কর কমিশনার আওরঙ্গজেব খান, সিলেট চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, পরিচালক জিয়াউল হক, খন্দকার ইসরার আহমদ রকী, সদস্য মো. জহির হোসেন, তফাজ্জুল হোসেন এফসিএ, কর পরিদর্শক সাইদুল হাসান মজুমদার, মো. শরাফত হোসেন, মো. আজিজ আহমদ প্রমুখ।