মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে রোববার (১৩ অক্টোবর) সমাপ্ত হয়েছে। এর আগে, ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে ৫ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছিল। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী পূজার দিন সকাল থেকে পূজা অর্চনা, অঞ্জলী প্রদান, চন্ডীপাঠ, প্রসাদ বিতরণ ও সন্ধ্যায় সন্ধ্যা আরতী অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের দুর্গাপূজার চতুর্থ দিন গত শনিবার দশমীর সন্ধ্যায় আরতি শেষে দেবীর বন্দনায় কমলগঞ্জের প্রতিটি পূজামন্ডপে বিষাদের সুর বাজতে শুরু করে। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রতিটি মণ্ডপে ছিল ভক্ত ও দশনার্থীদের ভীড়।
এবছর কমলগঞ্জে ১৩৭টি সার্বজনীন ও ১১টি ব্যক্তিগত মণ্ডপ মিলিয়ে মোট ১৪৮টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পূজা উদযাপন কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা ছিল ব্যাপক।
রোববার বেলা ৩টায় কমলগঞ্জ পৌর এলাকার পুরাতন ব্রিজ সংলগ্ন ধলাই নদীতে কমলগঞ্জ পৌর এলাকার বেশ কয়েকটি পূজামণ্ডপে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল চন্দ্র দাশ, সাধারণ সম্পাদক প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শংকর লাল সাহা, কমলগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গাবাড়ি পূজামন্ডপের সভাপতি প্রদীপ দত্ত রেন্টু, সাধারণ সম্পাদক লিটন দত্তসহ বিভিন্ন মন্ডপ কমিটির সদস্যবৃন্দ, সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসারসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও এলাকার সনাতনী ভক্তবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ধলাই নদীর পাত্রখোলা, মাধবপুর, কুরমা, চৈত্রঘাট, ঘোড়ামারাসহ বিভিন্ন স্থান এবং লাঘাটা, ক্ষিরণিনদীসহ বিভিন্ন পুকুর ও জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জন শেষে শান্তিজল গ্রহণ করা হয়। সেখানে ধুপ-ধোঁয়ার আরতি, ঢাকের বাদ্য আর উলুধ্বনিতে এক স্বর্গীয় আবেশের সৃষ্টি হয়।
পাঁচদিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজায় কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন পূজামন্ডপ পরিদর্শন করেন সিলেটের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার দেবজিৎ সিংহ, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।