সিলেটের ওসমানীনগরে ৩ প্রবাসির আলোচিত মৃত্যুর ঘটনার মেডিকেল রিপোর্ট (ভিসেরা রিপোর্ট) পুলিশের হাতে এসে পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) রিপোর্টটি পুলিশের কাছে এসেছে বলে নিশ্চিত করেছেন সিলেটের বিদায়ী পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম।
তিনি বলেন- ‘ময়না তদন্ত রিপোর্ট, ভিসেরা রিপোর্ট, ক্যামিকেল এনালাইসেস রিপোর্ট ও প্যাথলজিকেল রিপোর্ট পর্যালোচনা করে। পর্যালোচনা শেষে বিশেষজ্ঞ টিম একটি মেডিকেল রিপোর্ট আমাদের দিয়েছে। এই রিপোর্ট অনুযায়ী তিন প্রবাসির মৃত্যু কোনো বিষক্রিয়ায় হয়নি। কোনো আঘাতজনিত কারণেও মৃত্যু হয়নি। বরং জেনারেটরের ধোঁয়া থেকে দম বন্ধ হয়েই তাদের মৃত্যু হয়েছে- এটা নিশ্চিত।’
গত ১২ জুলাই ওসমানীনগরের দয়ামীর ইউনিয়নের ধিরারাই (খাতিপুর) গ্রামের আবদুল জব্বারের ছেলে রফিকুল ইসলাম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেন। ঢাকায় এক সপ্তাহ থেকে বড় ছেলে সাদিকুলের চিকিৎসা শেষে গত ১৮ জুলাই তাজপুর স্কুল রোডে ৪ তলা বাসার দুতলায় ভাড়াটিয়া হিসেবে উঠেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী রফিকুল ইসলামের ৫ সদস্যের পরিবার।
২৫ জুলাই রাতের খাবার খেয়ে স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলেদের নিয়ে বাসার একটি কক্ষে রফিকুল এবং অপর দুটি কক্ষে শ্বশুর, শাশুড়ি, শ্যালক, শ্যালকের স্ত্রী ও শ্যালকের মেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে বাসার অন্যান্য কক্ষে থাকা আত্মীয়রা ডাকাডাকি করে রফিকুলদের কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ‘৯৯৯’ নাম্বারে ফোন দেন রফিকুলের শ্যালক দিলওয়ার।
খবর পেয়ে দুপুর ১২টার দিকে ওসমানীনগর থানা পুলিশের একটি দল গিয়ে দরজা ভেঙে অচেতন অবস্থায় পাঁচ যুক্তরাজ্য প্রবাসীকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ব্রিটিশ নাগরিক রফিকুল ইসলাম ও তার ছোট ছেলে মাইকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্ত্রী হোসনে আরা, বড় ছেলে সাদিকুল ইসলাম ও একমাত্র মেয়ে সামিরা ইসলামকে হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয়। রফিকুলের স্ত্রী হোসনে আরা ও ছেলে সাদিককুল সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও দীর্ঘ ১১দিন সংজ্ঞাহীন অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে থাকার পর সামিরা গত ৫ আগস্ট মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।