সরকারের নানামূখী উন্নয়ন প্রকল্পে বদলে যাচ্ছে হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের শিক্ষা ব্যবস্থার চিত্র। মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, নার্সিং ইউন্সিটিটিউটসহ বাস্তবায়িত হয়েছে একাধিক মেগা প্রকল্প । এসব প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মমূখী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় খুশি হাওরবাসী।
জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলায় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পাশে ৫ একর জমির উপর হাওরের মনোরম পরিবশে নির্মাণ করা হয়েছে সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট। ২০১৮ সালের নভেম্বরে অনুমোদন হওয়ায় এই প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ কাজ শেষ করে হস্তান্তরের অপেক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বস্ত্র ও পাঠ মন্ত্রণালয়ের বস্ত্র অধিদপ্তরের আওতায় এই দৃষ্টিনন্দন অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১২৬ কোটি টাকা। কারিগরি শিক্ষার প্রসারে মন্ত্রণালয়ের এই মেগা প্রকল্পটির ভবন সংশ্লিষ্ট কাজ বাস্তবায়ন করেছে স্থানীয় গণপূর্ত বিভাগ।
গণপূর্তের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইন্সটিটিউটের নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। হস্তান্তরের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। ইতোমধ্যে সকল শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। নতুন বছর থেকে নিয়মিত শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইন্সটিটিউটে রয়েছে ৪ তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন, ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে ৪ তলাবিশিষ্ট দুইটি পৃথক ছাত্রাবাস, প্রিন্সিপাল কোয়ার্টার, শিক্ষকদের জন্য ডরমেটরি, স্টাফ ডরমেটরি, তিনটি ল্যাব, ওয়ার্কশপ এন্ড লাইব্রেরী, স্পিনিংসেড, ওয়াভিং সেড, ডায়িং সেড, মসজিদ, শহিদ মিনারসহ অত্যাধুনিক বিভিন্ন সুবিধা। ইতোমধ্যেই ইন্সটিটিউটটিতে শিক্ষক ও কর্মকর্তা কর্মচারীসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে। ২০২৪ সালে ইন্সটিটিউটটিতে ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের প্রথম সেশন শুরু হবে। তাই চলমান রয়েছে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম। হাওরের জেলায় কারিগরি শিক্ষার মান বৃদ্ধিসহ সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনবে এই ইন্সিটিটিউট। পাশাপাশি কর্মস্থানের সুযোগ বাড়বে বলে মনে করছেন এলাকাবাসীসহ সচেতন মহল।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী নাহিদ আহমেদ বলেন, একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কর্মমূখী শিক্ষার বিকল্প নেই। এতোদিন সুনামগঞ্জ কারিগরি শিক্ষার দিক দিয়ে পিছিয়ে ছিল। টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট নির্মাণে হাওরবাসীর বড় সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা সরকার সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হাসনাত হোসেন বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রধানমন্ত্রী সুনামগঞ্জবাসীকে বড় বড় প্রকল্প উপহার দিয়েছেন। টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট এর মধ্যে একটি। হাওরবাসী এর সুফল প্রত্যক্ষভাবে ভোগ করবে। আমাদের ছেলেমেয়েরা বস্ত্র শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেকে গড়ে তুলবে। কারিগরি শিক্ষার দ্বার এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উন্মোচন হল।
টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট হওয়ায় হাওর অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বস্ত্র প্রকৌশলী হওয়ার সুযোগ পাবে বলে মনে করছেন এই প্রতিষ্ঠান প্রধান মাহমুদুল হাসান । তিনি বলেন, ‘টেক্সটাইল ইন্সটিটিউটের ২০২৪ সালের শিক্ষার্থীর ভর্তি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। আমরা নভেম্বরের দিকে ক্লাস শুরু করবো। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বস্ত্র ও পাঠ নিয়ে গবেষণা করতে পারবেন। প্রাপ্ত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে বস্ত্র প্রকৌশলী হয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা।’
সুনামগঞ্জে টেক্সটাইল ইন্সিটিটিউট হাওর বাওরের জেলা সুনামগঞ্জে কারিগরি শিক্ষার দ্বার উন্মোচন করবে বলে প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।