সিলেটে আইএবি’র তৃণমূল দায়িত্বশীল সম্মেলনে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর নায়বে আমীর আলহাজ্ব মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেছেন, ‘দেশের জনগণ এক কঠিন সময় পার করছে। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের জুলুম-নির্যাতন, দেশের সম্পদ লুটপাট, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে আমাদের দেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর গভীর ষড়যন্ত্র রুখে দিতে দেশের ছাত্র সমাজ, দেশ প্রেমিক ইসলাম প্রিয় জনতা রক্ত দিয়েছে, জীবন দিয়েছে।’
শুক্রবার (৩০ আগষ্ট) বিকাল ৩টায় সিলেটের ক্বীনব্রীজ সংলগ্ন ঐতিহাসিক শারদা স্মৃতি হলে, ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার, অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও তাদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা। সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামী সমাজভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এখনো আহত হয়ে হাজারো ছাত্র-জনতা মেডিকেলের বেডে কাতরাচ্ছে। অপরদিকে দেশের ১১ টি জেলার জনগণ আকস্মিক রাজনৈতিক বন্যায় পানিবন্ধি হয়ে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছে। তাদের থাকার জায়গা নেই, তারা খুবই করুণভাবে দিনাতিপাত করছেন। অনেক মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন, অনেকে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। ভারত আন্তর্জাতিক নদী আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, বাঁধ ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের সাথে তামাশা করছে। আমরা ভারত সরকারকে হুশিয়ারী করে বলছি বাংলাদেশ-ভারত প্রতিবেশি দেশ, প্রতিবেশী দেশের সাথে এমন বেআইনি ও অমানবিক আচরণ বন্ধ করতে হবে। না হয় বাংলাদেশের জনগণ উপযুক্ত সময় এর কঠিন জবাব দেবে।’
মাওলানা আব্দুল আউয়াল আরো বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দায়িত্বশীল, কর্মীরা বন্যাদুর্গত এলাকায় বানভাসি মানুষের পাশে দাড়িয়ে সাথ্যানুযায়ী খেদমত করে যাচ্ছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর পীর সাহেব চরমোনাই আহবান করেছেন। দলমত, ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসতে, যাতে বন্যাদুর্গত এলাকার আমাদের ভাই-বোন ও সন্তানদের প্রয়োজনীয় খাবার, ঔষধ, পোষাক ও সার্বিক বিষয়ে যেন কোনরূপ কমতি না হয়। মুহতারাম প্রধান অতিথি, তৃণমূল দায়িত্বশীলদের উদ্দেশ্যে করে আরো বলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যে গণবিপ্লবের মাধ্যমে ইসলামী হুকুমত কায়েম করতে চায় এটা অনেকের বুঝে আসতো না। এখন এটা পরিস্কার হয়ে গেছে, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে। তাই আমদেরকে এখন থেকেই গণ দাওয়াতের মাধ্যমে গণবিপ্লবের ভিত্তি স্থাপন করতে হবে।’
জেলা সভাপতি আলহাজ্ব নযীর আহমদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আলহাজ্ব হাফেজ মাওলানা ইমাদ উদ্দিনের সঞ্চালনায় তৃণমূল দায়িত্বশীল সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (এলএলবি) বিশেষ অতিথি তার গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যের শেষে একটি প্রতিবাদ জানান যে, দীর্ঘদিন যাবত সিলেটের ঐতিহাসিক শারদা স্মৃতি হল সিলেট সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হওয়ার পরও অবহেলিত অবস্থায় ছিলো। জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে তার কিছুটা সংস্কার করা হলেও এখন শেনা যাচ্ছে এর ভাড়া বর্তমানের চেয়ে তিনগুণ বৃদ্ধি করা হবে আমরা এটা তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এমনকি আমরা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা দাবি করছি এই হলকে জনসাধারণের স্বার্থে বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে হবে। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন, নগর সভাপতি জননেতা মুফতি সাঈদ আহমদ।
এছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, নগর আন্দোলনের সাবেক উপদেষ্টা মাওলানা রেজওয়ানুল হক চৌধুরী রাজু, জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা আমীর উদ্দিন, নগর সহ-সভাপতি ডাক্তার রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ, জেলা জয়েন্ট সেক্রেটারী মুফতি মুহাম্মাদ আবু তাহের মিসবাহ, নগর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি প্রভাষক বুরহান উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা মতিউর রহমান খাঁন, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ নোমান আল ফাহাদ, প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা সুলাইমান আহমদ শাহী নগর প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রনি, নগর সদস্য আলহাজ্ব ইসহাক আহমদ, জেলা সদস্য আলহাজ্ব আব্দুল কারীম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা সভাপতি আলহাজ্ব ফজলুল হক্ব, নগর সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, যুব আন্দোলন জেলা সভাপতি মাওলানা বদরুল হক্ব, ছাত্র আন্দোলন জেলা সভাপতি আরিফুল ইসলাম শামিম, নগর সভাপতি মকবুল হোসাইন সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।