ইসলামি বক্তার জিহ্বা কেটে হত্যাচেষ্টা, ৪ জন গ্রেপ্তার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার আলোচিত ইসলামিক বক্তা মাওলানা শরীফুল ইসলাম নুরীর জিহ্বা কেটে হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহারনামীয় এক আসামিসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৯।

ঘটনার দুদিনের মাথায় মঙ্গলবার (০৭ মার্চ) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সন্ধ্যায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলো- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলাধীন শ্রীপুর গ্রামের মৃত হেলিম ভুইয়ার ছেলে এজাহারনামীয় আসামি জাকির হোসেন জাক্কু (৪৮), একই গ্রামের আমির আলী ভুইয়ার ছেলে মাহবুবুল আল শিমুল (৩৩), বিজয়নগর উপজেলার চাওড়া দৌলতবাড়ী গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে সুমন (৩৫) ও কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলাধীন বিংলা বাড়ি গ্রামের মৃত শেবু মিয়ার ছেলে মো. আমিরুল ইসলাম রিমন (২০)।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, র‍্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার সিনিয়র এএসপি আফসান-আল-আলম।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনি জানান, ইসলামী বক্তা মাওলানা শরীফুল ইসলাম নুরীর উক্ত দিনের বক্তব্যের কিছু অংশ আসামিদের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয় নি। সেই বক্তব্যে তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং ভিকটিমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার সিদ্ধান্ত নেয়। যার ফলশ্রুতিতে, মাওলানা নুরী ওরস থেকে ফেরার পথে আসামিরা তাঁর উপর অতর্কিত হামলা করে। হামলার ফলে ভিকটিমের জিহ্বা কেটে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা রক্তাক্ত গুরত্বর জখম হয়।

র‍্যাব-৯ জানায়, গত ০৫ মার্চ (রবিবার) রাত আনুমানিক সোয়া ১২টার দিকে ইসলামী বক্তা মাওলানা মুফতি শরীফুল ইসলাম নুরী বিজয়নগর উপজেলার দৌলতবাড়ী দরবার শরীফের মাহফিল শেষে তার পরিচিত এক জনসহ মোটরসাইকেলে বাড়ী ফেরার পথে রামধননগর রেলক্রসিং এর উত্তর পাশে পৌছামাত্র ধৃত আসামিসহ অন্যান্য অজ্ঞাতনামা আসামিরা ভিকটিম ও তার সহযোগী ব্যক্তির উপর অতর্কিত আক্রমন করে। এসময় আসামিরা ভিকটিমের মুখে আঘাত করলে তাঁর জিহ্বা কেটে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা রক্তাক্ত গুরুতর জখম হয়। পরে তারা ভিকটিমের সাথে থাকা ব্যক্তিকেও এলোপাথাড়ী মারধর করে গুরুতর জখম করে ও ভিকটিমের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ভাংচুর করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে, আশপাশের লোকজন ভিকটিমদের উদ্ধার করে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম শরীফুল ইসলাম নুরীর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

এ ঘটনায় (গত ০৫ মার্চ) ভিকটিমের চাচা মো. আব্দুল বাছির ভুইয়া বাদী হয়ে এজাহারনামীয় ০২ জনসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৭ জনের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ০৪।

র‍্যাব-৯ এর কর্মকর্তারা জানান, চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি মিডিয়ার মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশব্যাপী ব্যপক আলোচনার ঝড় তুলে। এরই প্রেক্ষিতে আসামিদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‌্যাব চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা ব্যাপকভাবে জোরদার করে।

ছায়া তদন্তের একপর্যায়ে র‌্যাব গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাচেষ্টার সাথে জড়িত আসামিদের অবস্থান সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাবের একাধিক আভিযানিক দল অভিযান চালিয়ে ০৭ মার্চ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে এজাহারনামীয় এক আসামিসহ ০৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করে।

পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেপ্তারকৃত আসামিদেরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানান র‍্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার সিনিয়র এএসপি আফসান-আল-আলম।